বগুড়ার গাবতলীতে ভ্যান চালক সিরাজুল ইসলামকে (২৮) গলাকেটে হত্যা ঘটনার প্রায় চার মাস হতে চললেও কোনো কূল কিনারা হয়নি। খোয়া যাওয়া ভ্যানটিও আর উদ্ধার হয়নি। থানা পুলিশ হত্যা মামলার ঘটনায় তিনজনকে আটক করলেও প্রধান আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি। অসহায় ও বিধবা মা তার ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার বামুনিয়া পোদ্দার পাড়া গ্রামের মৃত আনছার আলী ও বিধবা রুলী বেওয়ার পুত্র সিরাজুল ইসলাম ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। তার সংসারে মা ছাড়াও স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। গত ১৯ জুন দুপুরে ভ্যান চালাতে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর ২০ জুন সকালে উপজেলার কাগইল ইউপির তেলকুপি এলাকার একটি কলা বাগানে সিরাজুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশটি উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়। হত্যার অভিযোগে একই দিনে গাবতলী থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত সিরাজুলের বিধবা মা রুলী বেওয়া। এই মামলায় একই এলাকার মৃত লাল মিয়া মোল্লার চার পুত্র মোকছেদ মোল্লা, মোখলেছার রহমান মোল্লা, বাবু মোল্লা, মোস্তাফিজার রহমান এবং একই উপজেলার বামুনিয়া পোদ্দার পাড়ার দুলাল হোসেন পোদ্দার, আকবর আলী পোদ্দার, আখোরকান্দা গ্রামের ভোলা মন্ডলের ছেলে সাইফুল ইসলাম ও তার ছেলে পায়েল, আটবাড়িয়া গ্রামের আলেক উদ্দিনের ছেলে মিনারুল ইসলাম, বামুনিয়া পোদ্দার পাড়ার মৃত হবিবর মোল্লার ছেলে লুৎফর রহমান, বগুড়া সদরের জোগাইপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামসহ ১১ জনের উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় মোকছেদ মোল্লা, দুলাল পোদ্দার ও সাইফুল ইসলাম, শাজাহান, ভুট্ট মিয়া নামের পাঁচজনকে আটক করেছে।
তারা জেলহাজতে রয়েছে। সিরাজুলের মা হত্যার বিচার দ্রুত যেন হয় এ কারণে পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন জনের কাছে ধর্না দিচ্ছেন। মামলার বাদী রুলী বেওয়া জানান, আসামিদের সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে প্রায় ১ বছর ধরে মামলা চলে আসছিল। সিরাজুল ইসলামের লাশ পাওয়ার কয়েকদিন আগে আসামিরা প্রকাশ্যে বলে যে তার চার ছেলের মধ্যে দুই ছেলেকে হত্যা করবে। এই হুমকির কয়েকদিন পরই সিরাজুল খুন হয়। বগুড়ার গাবতলী থানার এসআই কান্তি কুমার জানান, হত্যা মামলাটি এখনো তদন্ত চলছে। আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের গ্রেফতারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।