বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

খাবার পানি সংকটে ৭ গ্রামের মানুষ

পটিয়ায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে ৩০০ গভীর নলকূপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

খাবার পানি সংকটে ৭ গ্রামের মানুষ

পটিয়া উপজেলায় পরিত্যক্ত একটি নলকূপ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পটিয়া উপজেলার সাত গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ খাবার পানি সংকটে রয়েছে। কোথাও মেশিনের মাধ্যমে পানি সংগ্রহ, কোথাও পাশের গ্রামের নলকূপের পানি ব্যবহার করছে। গ্রামগুলো হলো- চরকানাই, হুলাইন, পাচরিয়া, হাবিলাসদ্বীপ, লাখেরা, মোহাম্মদ নগর ও কোলাগাঁও।  

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘পটিয়ার এ সব গ্রামের পানির সংকট নিরসনে সাব-মার্সিবল পাম্পের মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির পানি ধারণ করে তা ব্যবহার উপযোগী করতে একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। আশা করি আগামীতে এ সমস্যা থাকবে না।’ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পটিয়ার উপসহকারী প্রকৌশলী উত্তম কুমার বলেন, ‘আমরা সরেজমিন পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ওই এলাকার ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে। সাধারণ মানুষের পানির সংকট নিরসনে সাব-মার্সিবল পাম্প দিয়ে পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’ সরেজমিনে দেখা যায়, ওই সব গ্রামে বহু নলকূপ আছে, কিন্তু নষ্ট। কোনটি কোনটি পরিত্যক্ত অবস্থায়, কোনটিতে আবর্জনার স্তূপ। স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক দশক আগেও এ সব গ্রামে পানি স্বাভাবিক ছিল। প্রায় ৮ বছর আগে গ্রামগুলোতে পানির সংকট শুরু হয়। নিকট অতীতে ৭০০ ফুট গভীরে সুপেয় পানি পাওয়া গেলেও এখন এক হাজার ২০০ থেকে ৩০০ ফুট গভীরেও আশানুরূপ পানি পাওয়া যায় না। বর্তমানে যেসব নলকূপ আছে সেগুলোতে অনেক কষ্ট করেই পানি তুলতে হয়। ২০১৮ সালের এক জরিপে এ সব গ্রামে ২৮০টি নলকূপ নষ্ট ছিল। বর্তমানে নষ্টের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কোলাগাঁও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘ইউনিয়নের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এটি। এখানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। পানি উঠে না বলে একটি নলকূপ দশ বছর ধরে নষ্ট পড়ে আছে, অন্যটি দিয়ে পানি উঠলেও ২০ মিনিট পরই তা আয়রনে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়।  হাবিলাসদ্বীপ গ্রামের বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘অনেক স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে বোতলে করে পানি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। সে পানি শিক্ষকরাও ব্যবহার করেন।’ জানা যায়, পটিয়ার এ সব গ্রামের পানির সংকট নিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ২০১৫ সালে উচ্চ আদালতে রিট করে। গত ২৮ নভেম্বর আদালত পটিয়ার ওই গ্রামগুলোকে ‘পানি সঙ্কটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। ২০১৩ সালের পানি আইনের ১৭ ধারার অধীনে আগামী তিন মাসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর