ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দুটি আঞ্চলিক মহাসড়কের ১৩ কিলোমিটার রাস্তার মাঝে বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই চলছে প্রশস্তকরণের কাজ। বরিশাল-নলছিটি আঞ্চলিক মহাসড়ক ও নলছিটি-হদুয়া পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কে গত ৬ মাস ধরে চলমান কাজে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়েকমাস আগে সড়ক দুটিকে ৬ ফুট বাড়িয়ে ১২ ফুট প্রস্থ থেকে ১৮ ফুট প্রস্থ করছে সওজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কের পাশের মাটি কেটে বালি ভরাটের আগে নানা কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ ছিল। এতে ওই সব সড়কের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলোর গোড়া নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বৃষ্টিতে কাদামাটিতে একাকার হয়ে হেলে পড়েছে অধিকাংশ খুঁটি। যার ফলে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। পরে সম্প্রতি বালি ভরাট করা হলেও সড়কের মাঝে খুঁটি রেখে কাজ করায় গাড়ি চলাচলে বিঘœ ঘটছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে। নলছিটির পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কের বাইপাশ সড়ক থেকে আখড়পাড়া বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও নলছিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক (দপদপিয়া ফেরিঘাট) পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারসহ মোট ১৩ কিলোমিটার সড়কের মাঝে খুঁটি রয়েছে। পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কের হদুয়া বন্দর থকে আখড়পাড়া বাজার পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ ঝালকাঠি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় থাকায় ওই ১১ কিলোমিটার জায়গার কিছু খুঁটি অন্যত্র সরানো হয়েছে। ফলে সেখানে কার্পেটিং কাজ শেষ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কার্পেটিং সম্পন্ন হওয়া ওই সড়কের মাঝেও বেশ কিছু খুঁটি রেখেই কাজ শেষ করা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাবি নলছিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে মোল্লারহাট পীর মোয়াজ্জেম হোসেন সড়কের ৫ কিলোমিটারসহ ১৩ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে ওজিপাডিকো বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওজিপাডিকো বলছে, উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার তিন মাস পরে তারা গত ১৮ ডিসেম্বর চিঠি পেয়েছে। খুঁটি অপসারণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে উভয় দফতরের উপসহকারী প্রকৌশলীদের নিয়ে ৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সওজের ১জন ও ওজিপাডিকোর ৩জন উপসহকারী প্রকৌশলী রয়েছেন। এ কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে খুঁটি অপসারণ করে পুনরায় স্থাপন করতে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। ব্যয় নির্বাহের টাকা পেলেই ওজিপাডিকো খুঁটি অপসারণ করবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ার অপেক্ষা না করেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কে খুঁটি রেখে ঠিকাদার দিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
ওজিপাডিকোর নলছিটি আবাসিক প্রকৌশলী ফিরোজ হোসেন সন্যামত বলেন, সড়ক দুটিতে উন্নয়ন কাজ শুরুর পর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রক্ষা করেনি। ঝালকাঠি ওজিপাডিকো বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। বিদ্যুৎ ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হবে। খুঁটি অপসারণ করে নতুন জায়গায় স্থাপনের নির্ধারিত খরচের টাকা পেলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীমা ইয়াসমিন বলেন, সড়ক থেকে খুঁটি সরানোর জন্য ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তাঁরা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।