মঙ্গলবার, ১১ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতশিল্প

বেকার হাজার হাজার শ্রমিক, সরকারি সহায়তা দাবি

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতশিল্প

বন্যায় সিরাজগঞ্জের তাঁতশিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সুতা, বিম, ত্যানা, নলি, মোটরসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পানিতে তলিয়ে নষ্ট হওয়ায় দিশাহারা তাঁত মালিকরা। বেকার হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। কাজ না থাকায় অর্থকষ্টে দিন কাটছে তাদের। এ অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার সহায়তা দাবি করেছেন মালিক ও তাঁতিরা।

জানা যায়, চলতি বছর চার দফা বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুরের প্রায় সব গ্রাম তলিয়ে যায়। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন তাঁতশিল্প। কারখানা তলিয়ে যাওয়ায় তাঁতিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন। জেলার প্রায় ১০ হাজার তাঁতের কাপড়সহ প্রধান উপকরণ সুতা-মাকড়-ত্যানা-মোটর ও নলি নষ্ট হয়ে গেছে। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নেই আয়-রোজগার। শুধু তাঁত মালিক নন, এর সঙ্গে জড়িত কয়েক হাজার নারী-পুরুষ কর্মহীন হয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছেন। করোনা থেকে বন্যা- টানা পাঁচ মাস বেকার থাকায় ক্ষুধা-দারিদ্র্য তাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিরানন্দ ঈদ কাটিয়েছে এসব পরিবার। সদর উপজেলার পূর্ব মোহনপুর ও বাঐতারা গ্রামের তাঁতি নুরুল ইসলাম, ইয়াসিন, কাওসারসহ অনেকে জানান, ‘টানা দেড় মাস তাঁত কারখানা বন্যার পানিতে তলিয়ে ছিল। ফলে তাঁতের সঙ্গে লাগানো কাপড়, সুতা, মোটর সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁতপ্রতি প্রায় ৪০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় সরকার সহায়তা না করলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব না। তাঁতশিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।’ তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘একদিকে আয়-রোজগার নেই। তার ওপর বেসরকারি সংস্থাগুলো কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি।’ তাঁতশ্রমিকরা জানান, করোনা ও বন্যার কারণে পাঁচ মাস কোনো কাজ নেই। পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছেন। জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ জানান, বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

সেখান থেকে সহায়তা পেলে তাঁতিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। বেসরকারি সংস্থাগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁতিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর