সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

বুড়িখোঁড়া নদীর যৌবন ফিরেছে

পুনঃখননে বেড়েছে নাব্য সেচ সুবিধা পাবেন চাষিরা

আবদুল বারী, নীলফামারী

বুড়িখোঁড়া নদীর যৌবন ফিরেছে

পুনঃখননে যৌবন ফিরে পেয়েছে বুড়িখোঁড়া নদী। বদলেছে রূপ। নদীটিতে এসেছে স্বাভাবিক গতি। নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন স্থানীয় জেলেরা। লক্ষিচাপ গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, নদী পুন:খননের ফলে বন্যার কবল থেকে রেহাই পেয়েছে এলাকাবাসী। আগে ফসলি জমি ছাড়াও আশপাশের এলাকা তলিয়ে যেতো। এখন দ্রুত পানি নিষ্কাশন হওয়ায় আগের মতো জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে না। জমিতে দুটি ফসল ফলানো যাচ্ছে। মৎস্যজীবী মজনু মিয়া বলেন, বুড়িখোড়া নদী খননের ফলে পানি থাকছে। ফলে মাছ উৎপাদন বাড়বে। বিশেষ করে দেশীয় মাছের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হবে। এখন নদীর প্লাবন ভূমিতে আমন আবাদ হচ্ছে। ফলে শুধু মৎস্যই না কৃষিতেও প্রভাব ফেলছে পুন:খনন। সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, এতোদিন যেভাবে নদীটির চরিত্র দেখে আসছি সে রকম এখন আর নেই। আগে নদীটির গতি প্রকৃতি ঠিক ছিল না। অল্প পানিতে বন্যা হতো। এখন সেটি আর নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী বিভাগ সূত্র জানায়, ৬৪ জেলার অভ্যন্তরীণ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুন:খনন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) গত বছর থেকে বুড়িখোড়া নদীর ৩২ কিলোমিটার পুন:খনন কাজ চলমান রয়েছে। নদীর নাব্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা থেকে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকা রক্ষা পেয়েছে। খননকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প পরিচালক বাদল মিয়া জানান, চলতি বছরের নভেম্বরে পুন:খনন কাজ শেষ হবে। এখন পর্যন্ত ৮৭ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, নদীর পাড় বাঁধা, ঘাস দিয়ে শোভাবর্ধন এবং বনায়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরে পাবেন নদী তীরবর্তি মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নাব্য বৃদ্ধির পাশাপাশি নদীর গভীরতা ও প্রশস্ততা বাড়ায় শুষ্ক মৌসুমেও পানি প্রবাহ থাকবে-যা কৃষিতে সেচ কাজে ব্যবহার করা যাবে। নদীতে মৎস্য উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বেকারত্ব ও দারিদ্র্য অনেকাংশে লাঘব হবে। উল্লেখ্য, প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নেওয়ায় দিন দিন সংকুচিত হচ্ছিল বুড়িখোড়া নদী। নদীর বুকে চাষাবাদের কারণে গভীরতা ও প্রশস্ততা হারিয়ে গিয়েছিল। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ভাটিতে যেতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পার্শ্ববর্তী এলাকা প্লাবিত হতো।

সর্বশেষ খবর