জনবল সংকটে বেহাল কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। এ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সেবা না পেয়ে আট ইউনিয়নের প্রায় তিন লাখ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা বাড়ছে। এ হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও ৩১ শয্যা নিয়েই চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। আগত রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। হাসপাতালের বাইরে সৌন্দর্য দেখে কখনো মনে হবে না এ হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়েছে। চারদিকে নদীবেষ্টিত এই উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা খারাপ। চিকিৎসকরা নিয়মিত কর্মস্থল উপস্থিত না হওয়া। ফলে আগত রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে দালালের মাধ্যমে পাশর্^বর্তী সোনারগাঁও, গজারিয়া, দাউদকান্দি, উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। মেঘনা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জালাল হোসেন বলেন, ৩১ শয্যা হাসপাতালকে কিছু দিন আগে আরও ২০ শয্যা হাসপাতাল বর্ধিত করে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখনো হাসপাতালের বর্ধিত ভবন উদ্বোধন না হওয়ায় কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে। এ হাসপাতালে ৯৭টি পদের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ ও ২০ জন মহিলা, মোট ৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী পদ রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি পদ শূন্য আছে। কয়েকজন রয়েছেন ডেপুটিশনে। অপর দুজন রয়েছেন ছুটিতে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক মাসে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঁচ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন।
স্থানীয় এক ভুক্তভোগী রোগী বলেছেন, চিকিৎসক স্বল্পতা এবং বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তার যথাসময়ে হাসপাতালে না আসায় অতি দরিদ্র ও সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর যাদের অর্থ সম্পদ রয়েছে তারা অন্যত্র গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। মেঘনা উপজেলা সৃষ্টি থেকে এ পর্যন্ত বেসরকারি উদ্যোগে কোনো বড় ধরনের হাসপাতাল না থাকায় এ হাসপাতালই একমাত্র ভরসা। একজন অসুস্থ রোগী জানায়, দিনের বেলায় এ হাসপাতালে দু-একজন ডাক্তার পাওয়া গেলেও রাতের বেলায় কোনো ডাক্তার পাওয়া যায় না। একজন ডাক্তার ডিউটিরত অবস্থায় থাকলেও মাঝে মধ্যে তাকেও পাওয়া যায় না। হাসপাতালের পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিভাগেও একাধিক পদ শূন্য থাকায় কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হচ্ছে না।