শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ব্যাংকিং ঋণ সুবিধাবঞ্চিত হাওরপারের খামারিরা

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

ব্যাংকিং ঋণ সুবিধাবঞ্চিত হাওরপারের খামারিরা

মৌলভীবাজারের হাওর অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে ঘাসকে জন্মানো কেন্দ্র করে স্থানীয় গ্রামগুলোতে গড়ে উঠেছে মৌসুমি গরু ও মহিষের খামার। দেশি জাতের ছোট-মাঝারি আকারের এই গরু-মহিষের চাহিদাও বেশি স্থানীয় বাজারে। বিশেষ করে ঈদুল আজহায় গরুর কদর বেড়ে যায়। পাশাপাশি বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে স্থানীয় বাজারে কদর বাড়ে মহিষের। চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানের পাইকার এসে মৌলভীবাজার থেকে মহিষ কিনে নেন। ব্যাংক থেকে ঋণ না পাওয়ায় এই উদ্যোগ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারছেন না খামারিরা। করোনা সংকটেও বেশির ভাগ খামারি প্রণোদনা ঋণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। জানা যায়, খামারগুলো হাওরের প্রাকৃৃতিক ঘাসনির্ভর হওয়ায় গরু, মহিষ লালন-পালনে তুলনামূলক খরচ কম। স্বল্প সময়ে কম খরচে বেশি মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এ অঞ্চলের অনেকে মৌসুমি খামারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সম্প্রতি কাউয়াদীঘি হাওরপারের রাজনগর উপজেলার পশ্চিমভাগ, কানিকিয়ারি, সুবিদপুর ও কুবজারসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে জানা যায়, এখানকার প্রায় একশ পরিবার চারটা থেকে শুরু করে ১৫-২০টা পর্যন্ত গরু ও মহিষ নিয়ে ছোট ছোট খামার গড়ে তুলছেন। এতে করে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। খামারি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌষ ও মাঘ মাসে গরু ও মহিষ কিনেন তারা। হাওরের খাবার খেয়েই বেড়ে ওঠে এই গাবাদিপশুগুলো। প্রায় জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত গরু, মহিষ উন্মুক্তভাবে চরে বেড়ায়। খামারিদের অনেকে জানান, পুঁজি সংকটের কারণে গরু-মহিষের সংখ্যা বাড়াতে পারেন না তারা। ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পেলে খামারের পরিসর বাড়িয়ে তারা আত্মনির্ভরশীল হতে পারতেন। ঋণের জন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কয়েকজন বলেন, রাজনগর উপজেলার সোনালী, কৃষি ও জনতা ব্যাংকে ক্ষুদ্র ঋণের জন্য গিয়েছিলাম। জনতা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আমাদের পাত্তা দেননি। সোনালী ব্যাংকে গিয়েও ঋণ না পাওয়ার কথা জানান। কৃষি ব্যাংক থেকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। রাজনগর উপজেলার খায়রুল, সামছুল, হেলালসহ অনেকে বলেন, আমাদের এলাকায় কয়েক বছর ধরে এভাবে মৌসুমি খামার ভালো ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার বা ব্যাংক থেকে আর্থিক সুবিধা পেলে এই ব্যবসা আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠত।

 রাজনগর জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক চামেলি রানী দেব জানান, ঋণ নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে। যাদের জামানত নেই তাদের জন্য সমস্যা হচ্ছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুস ছামাদ বলেন, ক্ষুদ্র খামারিদের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠাব। চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে খামারিদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

সর্বশেষ খবর