সোমবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদ্যুতে আলোকিত দুর্গম পদ্মার চর

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢেকে থাকা দেড়শ বছরের পুরনো পদ্মার চর উদ্ভাসিত হলো বিদ্যুতের আলোতে। স্বপ্ন পূরণ হলো কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর চিলমারী ইউনিয়নের ৫০ হাজার সাধারণ মানুষের। বিদ্যুত সংযোগ পাওয়ায় এই চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে চলে আনন্দের বন্যা।

রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল প্রায় দেড়শ বছর আগে জনবসতি গড়ে ওঠে। এ চরাঞ্চলে প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বসবাস করছে। ভারত সীমান্ত ঘেঁষা এসব গ্রাম পদ্মা নদীর কারণে মূল ভূখ- থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে নৌকাযোগে যাতাযাত সুবিধা থাকলেও শুকনো মৌসুমে এসব অঞ্চলে যাতায়াতে নানা বিড়ম্বনা দেখা দেয়।

গ্রীষ্ম মৌসুমে চারদিকে শুধু ধু-ধু বালুচরই চোখে পড়ে। এ সময় চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ভাড়ায়চালিত  মোটরসাইকেল। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামগুলো পরিণত হয় ভূতুড়ে জনপদে। আলোর ব্যবস্থা না থাকায় স্থানীয় বাজারগুলোও জনশূন্য হয়ে পড়ে। দিনে সূর্যের আলো থাকলেও রাতের অন্ধকার দূর করতে বিদ্যুতের আলো এই অঞ্চলের মানুষের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। বিদ্যুতের আলো  পেয়ে চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। সম্প্রতি চরাঞ্চলে ২২১টি             সংযোগের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের যাত্রা শুরু হয়।

ওই এলাকার ঠোটারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজাহার মন্ডল জানান, চরে বিদ্যুতের আলো আসবে তা কখনো চিন্তাও করেননি তারা। বিদ্যুৎ আসায় ব্যাপক এলাকা বিদ্যুতের মাধ্যমে সেচের আওতায় আসবে। একদিকে উৎপাদন খরচ কমবে অন্যদিকে ফলন বাড়বে। বিদ্যুত সংযোগ পাওয়ায় চরের মানুষের জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এসব এলাকায় ছোট ছোট কলকারখানা গড়ে উঠবে।   দৌলতপুর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি  জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) কে এম তুহিন মির্জা জানান, দুর্গম চর হওয়ায় সেখানে বিদ্যুতের লাইন স্থাপন ও মালামাল পরিবহন খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। পদ্মা নদীর মাঝ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চিলমারী এলাকায় একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪২ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর দুই ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পরিবার বিদ্যুতের আওতায় আসবে।

সর্বশেষ খবর