সোমবার, ৮ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনার অজুহাতে চাকরি গেল ১৪ শিক্ষকের

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মহামারী করোনা চলছে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি নির্দেশে বন্ধ রয়েছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বেতন ভাতাও প্রদান করা হয়নি। শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করেছে ঠিকই। করোনার সময় বাড়ি থেকে ডেকে এনে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য করা হয়। কিন্তু তারপরও কোনো প্রকার নোটিস ও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ছাড়াই ১৪ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট অমর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেকটাই হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে গত রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদনও করেছেন ওই শিক্ষকরা। করোনার মধ্যে সরকার যেখানে শিক্ষকদের নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধ করে যাচ্ছে এমন অবস্থায় তাদের ছাঁটাই ঘটনা অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করছেন স্থানীয়রা। শিক্ষকদের লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট অমর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে ২০১৩-১৫ সাল থেকে খ-কালীন সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করে আসছেন নাসরিন আক্তার, সজীব মিয়া, আকবর হোসেন, মো. এনামুল হক, জিল্লুর রহমান, রবিউল আউয়াল এমরান হোসেন, দুলাল চন্দ্র সাহা, খলিলুর রহমান, সামিনা আক্তার ও উম্মে হানি। কয়েক দিন আগে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই স্কুল কর্তৃপক্ষ আবারো খ-কালীন শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্থানীয় দুটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিল্লাল মিয়া চৌধুরীর কাছে গেলে তারা জানতে পারেন যে সব খ-কালীন সহকারী শিক্ষককে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

কাউকে কিছু না জানিয়ে বিনা নোটিসে গোপনে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগী শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের সভাপতি সফিকুর রহমানের কাছে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ওই শিক্ষকদের আবারো আবেদন করতে বলেন। পরে শিক্ষকরা ২০২০ সালের মে থেকে ২০২১ এর জানুয়ারি পর্যন্ত বকেয়া বেতন-ভাতা দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি ওই ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং বেতন-ভাতা  দেবেন না বলে জানিয়ে দেন। লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকরা করোনাকালীন সময়েও প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত ছিল। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে বিগত জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ রেজাল্টও এসেছে। কিন্তু কোনো কিছু না জানিয়ে গোপনে একযোগে সব খ-কালীন সহকারী শিক্ষকদের বাদ দেওয়ার কারণে ওই শিক্ষকরা পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। একজন শিক্ষিকা জানান, অন্যায়ভাবে তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল মিয়া চৌধুরী বলেন, বিদ্যালয়ের ফান্ড কম থাকার কারণে কমিটির সিদ্ধান্তে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কমিটি বেতন দিতে পারে না। স্কুলের ফান্ড শূন্য।

সর্বশেষ খবর