রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রকল্পে জমি আছে ঘর নেই

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

প্রকল্পে জমি আছে ঘর নেই

প্রকল্পে জমি আছে, ঘর নেই। এমন প্রকল্পের আওতায় লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ৫০টি গৃহ নির্মাণ কাজ সম্প্রতি শেষ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এসব ঘর নির্মাণের পর ৫০ গৃহহীনদের পরিবারে মধ্যে বিশুদ্ধ পানির জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি করে নলকূপ বসানোর কাজ শুরু করেছে। নলকূপ বসানোর শুরুতেই নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ইউএনও মনসুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে এসব নলকূপ বসানোর কাজে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তা বলতে অনিহা প্রকাশ করেছেন ইউএনও। এদিকে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় গতকাল সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধিকে তদন্তে পাঠান তিনি। সরেজমিনে নলকূপ উত্তোলনের পর ফজিলার বাড়িতে ১৭ ফিট পাইপ বসানোর সত্যতা পেয়েছেন। সেই সঙ্গে নিম্নমানের ইট দেওয়ারও সত্যতা পেয়েছেন তদন্তকারী। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, ৫০টির মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ থেকে ২০টি পরিবারে নলকূপ বসানোর হয়েছে। এসব কাজে অনিয়ম হলে নতুন করে এসব নলকূপের কাজ করানো হবে। আরও অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজেই এসব কাজের তদারকি ও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা। কিন্তু জমি আছে, ঘর নেই এই প্রকল্পের আওতায় ৫০টি পরিবারে নলকূপ বসানোর কাজটি তিনি নিজেই তদারকি ও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা না থেকে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজটি দিয়েছেন। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওই ব্যক্তি নিয়মমাফিক সামগ্রী না দিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন। শিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি নলকূপের জন্য ৪৫ ফিট পাইপ, ১০ ফিট একটি ফিল্টার ও ৩ ফিট একটি লোহার পাইপ বসানোর কথা।

 কিন্তু তার পরিবর্তে কোথাও একটি ১৫ ফিট পাইপ, ফিল্টার ও লোহার পাইপ বসিয়ে নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করেছেন। আর সেখান থেকে ২টি ১৫ ফিট পাইপ না বসিয়ে কাজ সমাপ্তি দেখিয়েছেন বলে ওই ভুক্তভোগীরা পরিবারগুলো অভিযোগ করেছেন। এদিকে নলকূপ বসানোর জন্য প্রত্যেক পরিবারকে প্রথম শ্রেণির ইট দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে নিম্নমানের ইট। শুধু তাই নয়, নলকূপ বসানোর জন্য ওই ৫০টি পরিবারকে এক ভ্যান বালু নিজের টাকায় কিনে দিতে হচ্ছে  বলে তারা অভিযোগ করেন। এছাড়া উপজেলা সদরের ভাদাই ইউনিয়নের আদিতমারী গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা ফজিলা বেগমের বাড়িতে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার  তার বাড়িতে ১৫ ফিট একটি পাইপ, ফিল্টার ও লোহার পাইপ দিয়ে একটি নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করেছেন। বাকি ২টি পাইপ না বসিয়ে নলকূপ বসানোর কাজের মিস্ত্রি নিয়ে গেছেন। কেন বাকি দুটি পাইপ না বসানো হলো এমন কথা বলতেই তারা ফজিলার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এসময় তারা কাজের ঠিকাদারের মোবাইল নম্বর দিয়ে চলে আসেন তার বাড়ি থেকে। এদিকে প্রকল্পের আওতায় ঘর পাওয়া আরেক পরিবার নুর নাহারের বাড়িতে গেলেও বেরিয়ে আসে না অনিয়মের অভিযোগ। নূরনাহারের স্বামী রফিক জানান, তার বাড়িতে ১৫ ফিটের প্রায় ২টি পাইপ, ফিল্টার ও লোহার পাইপ দিয়ে নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করেন। বাকি পাইপ নিতে চাইলে তিনি তা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে পাইপ রেখে চলে যান ঠিকাদরের লোকজন। তিনি আরও বলেন, এক বস্তা সিমেন্ট দিলেও নলকূপ বসানোর জন্য এক ভ্যান বালু কিনে আনতে বলেন তারা। তিনিও তার বাড়িতে দেওয়া নলকূপ বসানোর গোড়ায় ১০০ ইট নিম্নমানের বলে অভিযোগ করেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর