মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

অবহেলায় সোয়া দুই লাখ হেক্টর জমি

নজরুল মৃধা, রংপুর

অবহেলায় সোয়া দুই লাখ হেক্টর জমি

রংপুর অঞ্চলে অবহেলায় অনাবাদি সোয়া দুই লাখ হেক্টর জমি। এসব জমিকে চাষযোগ্য করে আবাদ করলে প্রতি বছর  সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব। এই অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমি রয়েছে অনাবাদি ও অকৃষি। এসব জমিতে কোনো ফসল হয় না বলে অনাদর-অবহেলায় পড়ে আছে। এসব অফসলি ও অনাবাদি জমির অধিকাংশই নদী এলাকায়। এর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নদীতে জেগে ওঠা চর এবং নিচু এলাকা। বাদ বাকি জমি সরকারি খাস অথবা অবৈধ দখলদারদের কাছে পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, চরাঞ্চলের জমিকে চাষযোগ্য করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ওই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন কৃষি-সংশ্লিষ্টরা।  সূত্র জানায়, রংপুর অঞ্চলে ৯ লাখ ৫৮ হাজার ২৬৩ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে কৃষি জমি ৭ লাখ ৩৫ হাজার ২০৬ হেক্টর, অকৃষি ২ লাখ ১৩ হাজার ২ হেক্টর এবং সাময়িক পতিত জমি রয়েছে ১০ হাজার ৫৫ হেক্টর।

অনাবাদি এসব জমি থেকে প্রতি হেক্টরে গড়ে ৬ মেট্রিক টন করে ফসল উৎপাদন হলে এক বছরে অতিরিক্ত আরও ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪২ মেট্রিন টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব। যা এ অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে এসব জমিতে কোনো প্রকার আবাদ হচ্ছে না। জানা গেছে, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে গত ৪ দশক থেকে এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ বিভিন্ন নদী শুকনো মৌসুমে শুকিয়ে ক্ষীণধারায় প্রবাহিত হয় আবার বর্ষার সময় দুই কূল ছাপিয়ে প্লাবিত হয়। ফলে প্রতিবছর পলি জমে এসব নদীর বুকে জেগে ওঠে অসংখ্য চর। জেগে ওঠা চরের জমি দুই থেকে তিন বছরের মাথায় আবাদ করা যায়। কৃষি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের মতে, অনাবাদি জমিগুলোকে ফসলি জমিতে রূপান্তর করতে পারলে বাড়তি খাদ্যশস্য উৎপাদনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যান বিশেষজ্ঞ মেছবাহুল ইসলাম জানান, চরাঞ্চলের অনাবাদি জমিগুলোকে চাষযোগ্য করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চরে দানাদার ফসল ধান, গম, ভুট্টা, রবি, সবজি, পাট উৎপাদন করা সম্ভব। এসব জমি চাষযোগ্য করতে পারলে প্রতি বছর লাখ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি ফসল উৎপাদন সম্ভব। তিনি আরও বলেন, চরাঞ্চল বাদে যেসব জমি পতিত অবস্থায় রয়েছে এসব জমি চাষযোগ্য করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর