মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

নদীগর্ভে বিলীন স্কুল ভবন আতঙ্কে গ্রামবাসী

কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

নদীগর্ভে বিলীন স্কুল ভবন আতঙ্কে গ্রামবাসী

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও অতিবৃষ্টির প্রভাবে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মাদারীপুরের কালকিনি আড়িয়াল খাঁ নদের পানি। এতে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙন। ভাঙনের কবলে পরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে চরহোগলপাতিয়া গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাইক্লোন সেল্টার, মসজিদ ও ফসলি জমি। কয়েক দিনের ব্যবধানে নদীভাঙনে ওই গ্রামের কয়েকশ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। বর্তমানে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ওই এলাকার দুই শতাধিক পরিবার। আড়িয়াল খাঁ নদ ভাঙনকবলিত অনেক মানুষ কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দ্রুত ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আলীনগর এলাকার চরহোগলপাতিয়া গ্রাম। এ গ্রামের ওপর দিয়েই বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। দুই দিন আগে আড়িয়াল খাঁ নদে চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি কাম সাইক্লোন সেল্টার, প্রায় ১ কিলোমিটার জমির ধান, আখ ও পাটসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমি চলে গেছে। এ ছাড়া বর্তমানে একের পর এক আড়িয়াল খাঁর পেটে চলে গেছে- চরহোগলপাতিয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দার বসতবাড়ি। নদীভাঙন আতঙ্কে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার তাদের বসতবাড়ি দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। নদীভাঙন আতঙ্কে বর্তমানে হোগলপাতিয়াসহ পাঁচটি গ্রামের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। এ এলাকার আরও কয়েকজন বলেন, চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ পর্যন্ত তিনবার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত বছর ভাঙনরোধে নদীতে নামমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল। তা নিয়ে হয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। ভুক্তভোগী ময়না ও রেণু খানমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদ আমাগো ঘড়বাড়ি, জায়গা জমি সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ভাঙন রোধ না করা হলে আমাগো বাকি যা আছে সব নদীতে চলে যাবে। আমরা গ্রামবাসী নদীভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে চাই। এ ছাড়া আমরা কোনো সাহায্য-সহযোগিতাও পাইনি। কৃষক আলমগীর ও জলিলসহ কয়েকজন বলেন, আমাগো ফসলের সব জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন কীভাবে বাঁচব। আমাগো কৃষকের কান্নায় কারও কিছু আসে যায় না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নদীভাঙনে চরহোগলপাতিয়া গ্রামের সব শেষ হয়ে গেছে। চেষ্টা করছি ভাঙনকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন বলেন, আড়িয়াল খাঁ রোধে ব্যবস্থা নিতে বহুবার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা হবে। আর বিদ্যালয় আবার নতুন জায়গায় উত্তোলন করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে করে কেউ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে না।

সর্বশেষ খবর