চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান অর্থকরী ফল আম। আমকে ঘিরেই আবর্তিত হয় এ জেলার অর্থনীতির চাকা। এ বছর রেকর্ড ছাড়িয়েছে আমের উৎপাদন। এবার ৩ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের বিপরীতে জেলায় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার আম উৎপাদন হয়েছে। অন্যদিকে আম মৌসুমে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, সুতলি, পেপার, ঝুঁড়ি মিলিয়ে আরও শত কোটি টাকা লেনদেন হয়। তবে বৈশ্বিক মহামারী করোনার থাবায় এবার তছনছ আম বাণিজ্য। লকডাউন আর বিধিনিষেধের কারণে আম অর্থনীতিতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়ীদের ৫০০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের খ্যাতি দেশজুড়ে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে আম-বাণিজ্য ধ্বংসের মুখে পড়েছে। করোনায় আমের দরপতনে হতাশ আম চাষিরা। আমের পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় গাছেই পাকছে আম। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পাকা আম ঝরে পড়ছে। আমচাষিদের অভিযোগ, করোনার কারণে বাইরের ক্রেতার অভাবে আমের বাজার ও বিপণন নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় আড়তদার ও ফড়িয়ারা। এতে অনেক কৃষক আমের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে আম চাষিদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আমচাষিরা বলছেন, জেলায় করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আমের ভরা মৌসুমে ১৪ দিনের লকডাউন শেষে এখনো বিধিনিষেধ চলমান। ফলে বাইরের ক্রেতারা হাট ও বাজারে আসতে পারেননি। এ সুযোগে স্থানীয় আড়তদাররা আম বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। যারা অন্যান্য বছর বাইরের ব্যবসায়ীদের কমিশনে আম কিনে দিতেন, তারাই এখন চাষিদের কাছে কম দামে আম কিনে বেশি দামে বাইরের ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করছেন। বাইরের ক্রেতা না আসায় অনেক আমচাষি স্থানীয় আড়তদারের কাছে আম বিক্রি করে।