চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ২০০ বছর ধরে একটি সেতুর অপেক্ষায় রয়েছেন ছয় ইউনিয়নের ৩ লাখ মানুষ। পাগলা নদীর বহু পুরনো ঘাটে নির্মিত বাঁশের সাঁকোই পারাপারের শেষ ভরসা। জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নে পাগলা নদীর ওপর বটতলা ঘাট দিয়ে শ্যামপুর, মনাকষা, শাহাবাজপুর, বিনোদপুর, কানসাট ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের মানুষ পারাপার হয়। এ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীর দুই পাড়ে রয়েছে পাঁচটি কলেজ, ১০টি উচ্চ বিদ্যালয়, মাদরাসাসহ প্রায় ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরও চলাচলের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো। স্থানীয়রা জানান, শ্রাবণ থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত নৌকায় পারাপার হতে হয় বটতলা ঘাট দিয়ে। বাকি সাত মাস বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হন স্থানীয় বাসিন্দারা। সারা বছরই নদী পারাপারে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নদীর এই ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি বারবার দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেই জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে যাত্রীদের দিতে হয় অতিরিক্ত টোল। সাঁকো ইজারাদার নির্ধারিত টোলের চেয়ে বেশি আদায় করেন। এর প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না। স্থানীয় শ্যামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা তারেক রহমান বলেন, এ ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিনজন সংসদ সদস্যকে অনুরোধ করা হয়েছে। কোনো সুরাহা মেলেনি। নির্বাচন এলে তারা শুধু প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচন শেষ হলে আর খোঁজ নেন না এ অঞ্চলের মানুষের। শাহাবাজপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম বলেন, পাগলা নদীর ওপর প্রায় ২০০ বছরের পুরনো বটতলা ঘাট দিয়ে ছয়টি ইউনিয়নের লাখ লাখ মানুষ অতিকষ্টে পারাপার হন। তাদের কষ্টের কথা সবারই জানান। তবুও এখন পর্যন্ত স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সুদৃষ্টি পড়েনি। জনদুর্ভোগ কমাতে এখানে দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান তিনি। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, ইতিমধ্যেই পাগলা নদীর ওই ঘাটে ব্রিজ নির্মাণ করার লক্ষ্যে মাটি পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ডিজাইন ও অর্থ বরাদ্দের পর অনুমোদন পেলেই টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু করা হবে।