শিরোনাম
শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পদ্মার হঠাৎ ভাঙনে আতঙ্ক

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

পদ্মার হঠাৎ ভাঙনে আতঙ্ক

পদ্মা নদীতে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে ফরিদপুরের সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় হুমকির মুখে পড়েছে জেলার একমাত্র নৌবন্দরটি। ইতিমধ্যেই নদীতে বিলীন হয়েছে নদী সংরক্ষণ তীরের ১০০ ফুট অংশের সিসি ব্লক। গত দুই দিনের ভাঙনে কয়েকটি বসতবাড়ি ও ফসলি জমি চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙনের কারণে দিশাহারা হয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন পদ্মা তীরবর্তী এলাকার হাজারো মানুষ। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না নদীভাঙন। ভাঙনের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষোভ বেড়েছে নদীপাড়ের মানুষের। বিভিন্ন সময় নদীপাড়ের মানুষ ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্ষা মৌসুম এলেই বাড়ে নদীভাঙন। আর এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ। ডিক্রিরচর ইউনিয়নের কয়েকজন অধিবাসী জানান, বন্যার পানি কমার পর হঠাৎ করেই গত বুধবার  রাতে আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও তাইজুদ্দিন মুন্সীর ডাঙ্গীতে ভাঙন শুরু হয়। হঠাৎ করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অনেকে। রাতের বেলার তীব্র ভাঙনে মুহূর্তের মধ্যেই নদীগর্ভে চলে যায় নদী তীর সংরক্ষণ বাঁধের বড় একটি অংশ। এরপর কয়েকটি বসতবাড়ি ও ফসলি জমিও চলে যায় নদীগর্ভে। হঠাৎ নদীভাঙনের কারণে গোটা এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় চরম আতঙ্ক। স্থানীয়রা জানান, বাড়িঘর হারিয়ে কয়েকটি পরিবার এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এখনো ভাঙন চললেও তীব্রতা কমে এসেছে। তবে ফের ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে পারে। নদীভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য মাঝেমধ্যেই স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের কাছে ধরনা দিলেও তারা কেবলই আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। তাইজুদ্দিন মুন্সী ডাঙ্গীর বাসিন্দা সালাম মাতুব্বর, আয়নাল শেখ, কবির বেপারী জানান, প্রতি বছর নদীভাঙনে গ্রামের পর গ্রাম বিলীন হলেও দেখার কেউ নেই। যখন নদীভাঙন শুরু হয় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন আসেন। তারা শুধু আশ্বাসই দেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাদের অভিযোগ, শুকনো মৌসুমে একটি প্রভাবশালী মহল ড্রেজার লাগিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করে। ফলে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই ভাঙন দেখা দেয়। ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। ভাঙনের কারণে এ এলাকার অনেক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। হঠাৎ করে ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে সিঅ্যান্ডবি ঘাট নৌবন্দরটি। নদীভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান দরকার বলে মনে করেন তিনি।  এদিকে নদীভাঙন শুরু হওয়ার পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে ভাঙন কবলিত এলাকায় বালির বস্তা ফেলা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না বলে জানান স্থানীয়রা। ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙন রোধে যা করা দরকার তাই করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর