অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘ আড়াই বছর পর গঠন করা হলো জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি। নতুন মেরুকরণে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি’র রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে আহ্বায়ক করে ৩৩ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এছাড়া অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাহাব উদ্দিন সাবুকে সদস্যসচিব করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৩৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। পরে দলের কেন্দ্রীয় দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান। কমিটিতে দলটির জেলা শাখার সাবেক সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়াকে নতুন আহবায়ক কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এদিকে নতুন কমিটি নিয়ে সাধারণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও অনেকে আবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জানা যায়, ২০১০ সালের ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপি’র সম্মেলনে আবুল খায়ের ভূঁইয়া সভাপতি ও সাহাব উদ্দিন সাবু সাধারণ সম্পাদক হন। ৯ বছর পর ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর গত প্রায় আড়াই বছর লক্ষ্মীপুরে বিএনপির কমিটি ছিল না। নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বে নানা জটিলতা দেখা দেয় জেলা বিএনপিতে। খায়ের পুনরায় সভাপতি ও সাবু ওই পদে প্রার্থী হওয়ায় এ জটিলতা দেখা দেয়। এ সময় কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানিসহ তার সমর্থকরা খায়েরের পক্ষে অবস্থান নেন। আর জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমানসহ অপরাংশ সাবুর পক্ষ নেন।
দলীয় কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে আসছিলেন তারা। এতে করে তাদের সমর্থকরা বিভক্ত হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে সম্প্রতি তৃণমূলের মতামত (ভোটের মাধ্যমে) নেন কেন্দ্র। জানা যায়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ২৭ জন ভোটার নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সভাপতি পদে সাবু ১৪ ভোট, এ্যানি ৯ ও খায়ের পায় ৪ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে হাসিব ১৮ ভোট, রিয়াজ ৬ ও নিজাম পান ৩ ভোট। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাবু-হাসিব ও খায়ের-এ্যানিকে নিয়ে নানা মন্তব্য করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। জানতে চাইলে জেলা বিএনপি’র নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দুঃশাসন ও ফ্যাসিবাদ সরকারের বিরুদ্ধে এখন আন্দোলনই আমাদের মূল লক্ষ্য। অনেক দিন পর কমিটি হলো। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর।’ এদিকে নতুন কমিটির সদস্য সচিবকে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বক্তব্য জানা যায়নি। তবে নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, এ কমিটিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হয়নি। তবুও কেন্দ্র যেহেতু এ কমিটি দিয়েছেন এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।