কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ কান্দিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঠাকুরপাড়ার মদিনা মসজিদ সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত এ বিদ্যালয়টি তালাবদ্ধ ছিল গত ১৮ বছর। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি খোলা হয় বিদ্যালয়ের দরজা। শিক্ষার্থীবিহীন স্কুলটি পাহারা দিচ্ছেন দুজন শিক্ষক। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত ভবন নির্মাণ করে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা চালার ফুটো দিয়ে সূর্যের আলো এসে পড়ছে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনের ভিতরে। কিছু বাঁশ ঝুলে আছে মেঝের ওপর। পাশে একটি বোর্ডে শিক্ষামূলক বাণী লেখা। একটি টেবিল, একটি চেয়ার ও দুটি বেঞ্চ নিয়ে টিনশেড ঘরে বসে আছেন দুজন শিক্ষক। তারা ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা ও বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব জানান দিতে কাজ করছেন। পরিত্যক্ত বিদ্যালয় ঘরে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা। বাইরে ভর্তি বিজ্ঞপ্তির ব্যানার ঝোলানো হয়েছে। জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালে পরিত্যক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এখানে পাঁচজন শিক্ষক ছিলেন। যাদের চারজনই অবসরে গেছেন। বর্তমানে তিনজন এমএলএস পালা করে বিদ্যালয়টির দেখভাল করেন। অন্য বিদ্যালয়ে কাজ করার পাশাপাশি তারা এখানে সময় দেন। দুজন শিক্ষক আছেন। এদের একজন ফারজানা হায়দার। তিনি কুমিল্লা সদরের আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ডেপুটেশনে এসেছেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও তিনি। আরেকজন শামীমা আক্তার। তিনি ডেপুটেশনে এসেছেন নগরীর হোচ্ছামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। শামীমা আক্তার জানান, আমরা এখানে চ্যালেঞ্জ নিতে এসেছি। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বেশি ভর্তি হবে। দ্রুত নতুন ভবন করা হলে এর সুফল পাবেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারজানা হায়দার বলেন, বিদ্যালয়টিতে এ বছর ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তারা আপাতত ঠাকুরপাড়ার দুটি বিদ্যালয়ে ক্লাস করছে। কুমিল্লার অন্যতম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিণত হবে দক্ষিণ কান্দিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। এখন দরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, বিদ্যালয়টির অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কাজ করা হবে। এখানে জায়গার স্বল্পতা আছে। তাই বাচ্চাদের খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য গ্রাউন্ড ফ্লোরকে মাঠের মতো করে ব্যবহার করা হবে। ক্লাস রুম হবে ওপরে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে।