মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

হঠাৎ পানি বাড়ছে তিস্তায় ফসলের ক্ষতি

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

হঠাৎ পানি বাড়ছে তিস্তায় ফসলের ক্ষতি

চৈত্র মাসে হঠাৎ অসময়ে ভারত গজলডোবা ব্যারাজ খুলে দেওয়ায় পানি বেড়েছে তিস্তায়। তলিয়ে গেছে মরিচ-পিঁয়াজ, আলু, মিষ্টি কুমড়া, গম, তামাক, ভুট্টাসহ বিস্তীর্ণ চরের আবাদ। পাঁচ দিন থেকে তিস্তার পানি দিনে কমলেও বিকাল থেকে বাড়ছে। চৈত্র মাসে তিস্তা নদীতে সাধারণত পানি থাকে না বললেই চলে। গত কয়েক দিনে হঠাৎ তিস্তায় পানি বেড়েই চলেছে। এর ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী জেলার বিস্তীর্ণ তিস্তার চরে কৃষকের বিভিন্ন ধরনের ফসল পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে বৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টের উজানে ভারত গজলডোবার গেট হঠাৎ খুলে দেওয়ায় এ শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চর এলাকার বিভিন্ন ফসলি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ সময় পানির প্রয়োজন না হলেও ভারত এ শুষ্ক মৌসুমে পানি দিয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কিউসেক। সেচ কাজে ব্যবহার হয়েছে মাত্র ১১ শ কিউসেক। ভারত থেকে অতিরিক্ত পানি আশায় তিস্তা ব্যারেজের দুটি গেট খুলে দেওয়ায় কৃষকের ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে ফসল নষ্ট হয়েছে। তিস্তা চরের পিঁয়াজ চাষি ফজর আলী জানান, হঠাৎ চৈত্র মাসে তিস্তার পানি কেন বৃদ্ধি পেল আমাদের জানা নেই। আমার প্রায় এক একর আবাদি পিঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। চরের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত। প্রতি বছর চৈত্র মাসে এমন পানি আসে না। এ বছর হঠাৎ তিস্তার পানি এলো। এখন পানির দরকার নেই। অথচ ভারত পানি দিয়ে আমাদের মতো অসহায় কৃষককে বেকায়দায় ফেলেছে। বাইস পুকুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন জানান, তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় জেগে ওঠা চরে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে গম ও পিঁয়াজ রোপণ করেছি কিন্তু পাঁচ দিন থেকে ব্যারেজের উজানে পানি ওঠানামা করায় গম, পিঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, জায়গা জমি নেই, তাই এ  জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ফসল আবাদ করে আমরা জীবিকা নির্ভর করি। এ বছর হাজার হাজার কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা আবারও ক্ষতিগ্রস্ত। পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাশেদিন ইসলাম জানান, গজলডোবা ব্যারাজের কয়েকটি গেট খুলে দেওয়ায় গত ৭২ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কিউসেক পানি উজান থেকে এসেছে। ফলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। লালমনিরহাট কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে আবার কিছু ফসলের উপকার হয়েছে। এখনো ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। সামান্য কিছু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের তালিকা করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর