শিরোনাম
বুধবার, ১১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রাবার ড্যাম কৃষকের গলার কাঁটা

১০ বছরেও মেলেনি সেচসুবিধা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

রাবার ড্যাম কৃষকের গলার কাঁটা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌর এলাকায় ধরলা নদীতে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে রাবার ড্যাম। নির্মাণের ১০ বছরেও এখান থেকে সেচসুবিধা পাননি কৃষকরা। রাবার ড্যামটি এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৩ সালে ১৪৫ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৬৪ মিটার প্রস্থের রাবার ড্যামটি নির্মাণ করা হয়। নদী তীরের কয়েকটি গ্রামের ৬৫০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনতেই ড্যামটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে আদিতমারী উপজেলার এইচএমঅ্যান্ডআর (জেভি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন চাষিদের মধ্যে স্বল্প টাকায় সেচসুবিধা পৌঁছাতে সরকার ৬০০ মিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, স্লুইসগেট, পানির পাম্প, আরসিসি নালা, পাম্প হাউস এবং চলাচলের জন্য সেতু নির্মাণ করে। প্রতিবছর ধান উৎপন্ন ও আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয় ২২ হাজার মেট্রিক টন। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যামটি সচল রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া, পরিকল্পনা প্রয়োগে অদক্ষতা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেচযন্ত্র চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে ভেস্তে যাচ্ছে সরকারের এ প্রকল্প। রাবার ড্যাম প্রকল্প পরিচালনায় ২০১৩ সালে ‘ধরলা নদী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড’ গঠন করা হয়। সমিতিতে ৪০৮ জন কৃষক সদস্য হয়েছেন। কার্যক্রম না থাকায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে সমিতিটি। পাটগ্রাম পৌরসভার বেংকান্দা গ্রামের চাষি সহির আলী বলেন, প্রায় ১০ বছর হলো রাবার ড্যাম করা হয়েছে। এটি করে কোনো লাভ হয়নি। এক দিনও ধান খেতে পানি দেওয়া যায়নি। এটি চালু হলে দরিদ্র কৃষকের অনেক উপকার হতো। একাধিক চাষি অভিযোগ করে বলেন, রাবার ড্যাম নির্মাণের পর আশা করেছিলাম ভালো চাষাবাদ করে সংসারের চাকা সচল হবে। কিন্তু হয়েছে তার উল্টো। ধরলা নদী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রহমান বাবুল চৈতু বলেন, ড্যামটি সচল করতে জেলা, উপজেলা ও ঢাকার একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব-উল আলম বলেন, ‘রাবার ড্যাম প্রকল্পের মাধ্যমে ফসলের খেতে সেচসুবিধা দিতে স্থানীয় লোকজনের অসহযোগিতায় দায়ী। তাঁরা রাবার ফোলাতে নিষেধ করেন। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ওই রাবার ড্যাম পড়ে আছে এলাকাবাসীর গাফলতির কারণে। ড্যাম ফোলালে তাদের ক্ষতি হয় এমন অভিযোগে তারা কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সহযোগিতা করেন না।

সর্বশেষ খবর