দেশের খাদ্য উদ্বৃত্ত ও সর্ববৃহৎ চাল উৎপাদনকারী জেলা নওগাঁ। আর দেশের চালের চাহিদার সিংহভাগই মেটানো হয় এ জেলা থেকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে সব ধরনের পাইকারি ও খুচরা বাজারে ভরা মৌসুমে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। প্রকারভেদে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৪ টাকা। চালকল মালিকদের দাবি, ধানের মূল্যবৃদ্ধির কারণে চাল উৎপাদনের খরচ বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি মণ ধানের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। চাল উৎপাদনের পর খরচ সমন্বয় করতে গিয়ে দাম বাড়াতে হচ্ছে। গতকাল নওগাঁ পৌর খুচরা চাল বাজারে গিয়ে কথা হয় নওগাঁ পৌর চাল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্পাকাটারী চাল ছিল ৬৮-৭০ টাকা কেজি সেখানে বর্তমানে ৭২-৭৪ টাকা কেজি, স্বর্ণা-৫ ছিল ৪৫ টাকা কেজি সেখানে বর্তমানে ৪৮-৫০ টাকা কেজি, জিরাশাইল ছিল ৬০-৬২ টাকা কেজি সেখানে বর্তমানে ৬৪-৬৫ টাকা কেজি, উনত্রিশ ছিল ৫৫-৫৬ টাকা কেজি সেখানে বর্তমানে ৬০ টাকা কেজি। অর্থাৎ প্রকারভেদে প্রতিটি চালে কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে। পৌর ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন, নতুন ধান উঠার পর চালের দাম কমার কথা থাকলেও বর্তমানে তা উল্টো। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার চালের দাম বেশি। কারণ হিসেবে মিলাররা তাদের বলছেন, বৈরি আবহওয়ার কারণে কৃষকের ধান নষ্ট হয়েছে। ফলন যা হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। তাই বাজারে আমদানি কম হওয়ায় ধানের দাম বেশি। আর ধানের দাম বেশি হলে চালের দাম বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা পরীমনি বলেন, হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে গেছে। মান ভেদে চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনের খরচও বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহ আগে এক বস্তা চাল কিনেছি ২৮০০ টাকা, বর্তমানে ওই বস্তা কিনতে হচ্ছে ৩২০০ টাকায়। প্রতিদিন বাড়ছে চালের দাম। এতে করে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় বিপাকে। জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, চালের দাম বাড়ার অন্যতম কারণ ধানের দাম বেশি। বৈরি আবহাওয়ার কারণে নওগাঁসহ উত্তরাঞ্চলে ধানের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ধানের উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কার কারণে বাজারে ব্যবসায়ীদের ধান কেনার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বেশি দামে ধান কেনার পর চাল উৎপাদনের পর খরচ সমন্বয় করতে গিয়ে চালের দাম বাড়াতে হচ্ছে। তাই বিষয়টি সরকারের নজর দেওয়া দরকার।