শুক্রবার, ১০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ধানের গাড়িতে পথে পথে চাঁদাবাজি

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

ধানের গাড়িতে পথে পথে চাঁদাবাজি

বগুড়ার শেরপুরে কৃষিপণ্য পরিবহনের যানবাহন আটকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় হাট-বাজারের রশিদ বই ব্যবহার করে বিভিন্ন সড়কের মোড়ে চলছে এই চাঁদাবাজি। ধানবোঝাই প্রত্যেক গাড়ি থেকে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে মানুষ। বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও ধান-চাল ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের জামাইল হাট, কুসুম্বী ইউনিয়নের আলতাদীঘি বোর্ডের হাট, বেলঘরিয়া হাট ও শহরের বারোদুয়ারী হাট ঘিরে সড়কের বিভিন্ন মোড়ে পাহারা বসানো হয়েছে। এসব হাটের রশিদ বই ব্যবহার করে প্রতিদিন কৃষিপণ্য পরিবহনের ট্রাক, ভটভটি, নছিমন-করিমন ও পাওয়ার ট্রলি আটকে চাঁদা আদায় করছে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা। এক মণ ধানে ১০-১৫ টাকা হারে হিসাব কষে প্রতি যানবাহন থেকে আদায় করা হয় চাঁদা। তাদের দাবিকৃত টাকা না দেওয়া পর্যন্ত গাড়িগুলো আটকে রাখা হয়। এতেও কাজ না হলে চাঁদার টাকার সমপরিমাণ মালামালও যানবাহন থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী, হাটের সীমানার মধ্যে শুধু হাটবারে নির্দিষ্টহারে খাজনা আদায় করার কথা। কিন্তু সেটি মানা হচ্ছে না। প্রতিদিনই ইচ্ছেমতো খাজনার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে শুক্র ও মঙ্গলবার জামাইল হাট বসে। অথচ প্রতিদিন ও রাতে হাটের রশিদ বই ব্যবহার করে খাজনা নেওয়া হচ্ছে। একদল যুবক লাঠি হাতে সড়কে অবস্থান নিয়ে ধ   নবোঝাই গাড়ি আটকে আদায় করছে চাঁদার টাকা। চন্ডেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান, সাহাবুদ্দিন, লক্ষ্মীকোলা গ্রামের আফজাল হোসেনসহ একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, আলতাদীঘি বোর্ডের হাটে প্রতিদিন ধানবোঝাই যানবাহন থেকে বস্তাপ্রতি ১৫ টাকা হারে নেওয়া হচ্ছে। শ্যাওলাগাড়ী এলাকার একদল যুবকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন তারা। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। খাজনার নামে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র প্রায়ই ঘটছে হামলা-মারপিট। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ মে উপজেলার মহিপুর নামক স্থানে বারোদুয়ারী হাটের খাজনা আদায়কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। খাজনার নামে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে বারোদুয়ারী হাটের ইজারাদারদের পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম শাহীন বলেন, বিগত দিনে যেভাবে খাজনা আদায় করা হয়েছে। তারাও সেভাবে খাজনা আদায় করছেন। এরপরও যে টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে হাট ইজারা নিয়েছেন তা উত্তোলন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বলেন, শর্ত সাপেক্ষে হাট ইজারা দেওয়া হয়। কোনো ইজারাদার হাট এলাকার বাইরে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে খাজনা আদায় করলে অবশ্যই তিনি অন্যায় করছেন।

সর্বশেষ খবর