শনিবার, ২৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

৫২ কেজিতে মণ ধরে আম ক্রয়, লোকসানে চাষিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

৫২ কেজিতে মণ ধরে আম ক্রয়, লোকসানে চাষিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বাজারে ৫২ কেজিতে এক মণ ধরে আম কিনছেন আড়তদাররা। আর বিক্রি করছেন ৪০ কেজিতে মণ ধরে। এতে লোকসানে পড়েছেন চাষিরা। জানা যায়, কানসাট বাজারে চাষিদের জিম্মি করে ৫০-৫২ কেজিতে মণ ধরে আম কিনছেন আড়তদাররা। কেউ বাড়তি ওজনে আম বিক্রি করতে না চাইলে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। কানসাটে বাজারে আম বিক্রি করতে আসা দুর্লভপুর ইউনিয়নের সাদেক হোসেন বলেন, এ বছর গাছে কম আম ধরেছে। এতে দাম ভালো পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করেছিলেন। আম বিক্রি করতে এসে দেখেন আড়তদাররা ৫২ কেজিতে এক মণ হিসেবে কিনছেন। তারা ৪০ কেজিতে মণ ধরে আম কিনবেন না বলে জানিয়ে দেওয়ায় তিনি লোকসানের মুখে পড়েছেন। সাদেক জানান, গত বছরও আম চাষিদের জিম্মি করে ৫০ কেজিতে মণ হিসেবে নিয়েছেন আড়তদাররা। এবার ৫২ কেজিতে মণ ধরছেন। কানসাট ইউনিয়নের আব্বাস বাজার এলাকার বাগান মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, আম কাঁচা পণ্য। গত পাঁচ বছর থেকে আমরা ৪৫ কেজিতে এক মণ ধরে আম বিক্রি করতাম। গত বছর হঠাৎ আড়তদাররা ৫০ কেজিতে মণ নেওয়া শুরু করেন। এবার বলছেন ৫২ কেজিতে মণ বিক্রি করতে হবে। আম চাষিরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন এবং লোকসান গুনতে হচ্ছে। কানসাটে আম বিক্রি করতে আসা জিয়াউর রহমান নামে একজন কলেজশিক্ষক বলেন, ১৫ দিন ধরে কানসাট বাজারে আম বিক্রি করতে আসছি। এমন কোনো দিন নেই যে, আড়তদারদের সঙ্গে ঝামেলা হচ্ছে না। কেউ বলেন ৫০ কেজিতে মণ নেবেন, কেউ বলেন ৫২ কেজিতে।

তবে এবার আমের দাম ভালো আছে। কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক টিপু বলেন, এ বাজারে ওজন নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করা হবে। শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, কানসাট বাজারে আম চাষিদের জিম্মি করে ৫০-৫২ কেজিতে মণ নিচ্ছেন আড়তদাররা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শত শত আম চাষি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ ছাড়া জেলার সব আম বাজারে একই ওজনে মণ করা জরুরি। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, কানসাট আম বাজারে ওজন নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি শুনেছি। জেলার অন্য আম বাজারের সঙ্গে ওজন মিলিয়ে এ বাজার চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখনো আমের মণ ৫২ কেজিতে নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, জেলার ভোলাহাট, রহনপুর ও সদরের তহাবাজারে ৪০ কেজিতে আম বেচাকেনা হলেও একমাত্র কানসাটে ৫২ কেজিতে মণ ধরে আম কেনা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর