পঞ্চগড়ের বিভিন্ন হাটবাজারে মৌসুমি ফলের বাজার সরগরম হয়ে উঠেছে। ব্যাপক সরবরাহের পাশাপাশি প্রচুর বিক্রিও হচ্ছে। জ্যৈষ্ঠের প্রথম থেকেই দেশি ফল আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, পেয়ারাসহ নানা প্রজাতির মৌসুমি ফল বাজারে উঠছে। সাধারণ মানুষের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিদেশি ফল কিনে খেতে না পারলেও এখন তারা দেশি ফল খেতে পারছে। এ বছর খুব একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় মৌসুমি ফলের আবাদ তেমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। ফলে স্থানীয় চাষি এবং বাগানিরা সব ধরনের ফলের ফলন পেয়েছে বেশি। ব্যাপক সরবরাহ থাকায় ফলের দামও মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে। প্রথমদিকে স্থানীয় জাতের বিভিন্ন আম ৬০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লিচু ২৬০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া জাম, জামরুল, গোলাপজাম লটকোনসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে। দাম কম থাকার কারণে দেশের অন্যান্য প্রান্তের ফল ব্যবসায়ীরা ছুটে আসছেন পঞ্চগড়ে। এ এলাকার ফল যাচ্ছে সারা দেশে। এতে করে চাহিদা বাড়ায় এসব ফলের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার চাষি কাজী আনিস বলেন, তেঁতুলিয়ার সমতলের চা বাগানে প্রতিটি চাষিই চায়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছ রোপণ করেছেন, ফলনও হয়েছে প্রচুর। এ আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শামিম হাসান জানান, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পঞ্চগড়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক আকারে বিভিন্ন ফলের আবাদ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চাষিদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে বিভিন্নভাবে। জেলায় সফল ফল চাষ করে বাড়তি ফল জেলার চাহিদা মিটিয়ে তা সরবরাহ করা হবে দেশের বিভিন্ন চালান ক্ষেত্রে। সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সিরাজউদদৌলা পলিন বলছেন, এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে পুষ্টির অভাব রয়েছে প্রচুর। দেশি মাছ, শাক-সবজি এবং ফলমূল পরিমিতভাবে না খাওয়ার কারণে পুষ্টির অভাবে বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ে ভুগছে শিশুসহ বয়স্ক মানুষ। মৌসুমি ফল বেশি পরিমাণ খেলে এসবের অভাব পূরণ হতে পারে অনায়াসে। আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, মৌসুমি ফল শিশুদের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।