ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ফরিদপুরে ইতোমধ্যেই জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাট টেপাখোলা, সিঅ্যান্ডবি ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানের হাটগুলোতে বর্তমানে বিপুলসংখ্যক গরু ওঠতে শুরু করেছে। দেশীয় বড় গরুর পাশাপাশি মাঝারি সাইজের গরু সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে হাটগুলোতে। এবার ভারতীয় গরুর তেমন একটা দেখা মিলছে না। এ বছর মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানালেন গরু ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরুর ব্যবসায়ীরা হাটগুলোতে ভিড় করছে। এ ছাড়া কোরবানির জন্য ক্রেতারা তাদের পছন্দের গরু কিনতে হাটে আসছেন। ফরিদপুর জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০টির মতো গরু-ছাগলের হাট রয়েছে। এ হাটগুলোতে কয়েকদিন আগে থেকেই গরু-ছাগল ওঠতে শুরু করেছে। হাটগুলোতে বিপুলসংখ্যক গরু উঠলেও প্রথমদিকে বিক্রি হচ্ছে কিছুটা কম। তবে, আগামী রবিবার থেকে পুরোদমে জমে ওঠবে বেচাকেনা এমনটাই বলছেন গরু ব্যবসায়ীরা। ঈদের কিছুদিন বাকি থাকায় গরু লালন-পালন নিয়ে শহরবাসী নানা সমস্যা থাকায় তারা এখনো গরু কিনছেন না। ফরিদপুর শহরের সবচেয়ে বড় গরুর সাপ্তাহিক হাটটি বসে মঙ্গলবার টেপাখোলা এলাকায়। দুপুরে এ হাটে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে গরু বিক্রির জন্য হাটে এনেছেন। বিশাল এলাকাজুড়ে থাকা এ হাটে বিপুলসংখ্যক গরু এনেছেন বিক্রেতারা। স্থানীয়ভাবে লালন-পালন করা গরুর পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা গরু এ হাটে এনেছেন বিক্রির জন্য। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরু ব্যবসায়ীরা যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, নড়াইল থেকে গরু কিনে ট্রাকে করে ফরিদপুরের এ হাটে নিয়ে আসেন। কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার ব্যবসায়ী জাবেদ পাটোয়ারী দুটি ট্রাকে করে ১৬টি গরু এনেছেন।
সব গরু তিনি এ হাটে বিক্রির আশা করছেন। তিনি বলেন, এ হাট থেকে বেশিরভাগ গরু কিনে নেন ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। তারা স্থানীয় হাটে নিয়ে গরুগুলো বিক্রি করে থাকেন। ঝিনাইদহ এলাকা থেকে আবুল হোসেন ও আক্কাস প্রামাণিক প্রতি সপ্তাহে এ হাটে গরু নিয়ে আসেন। আক্কাস প্রামাণিক জানান, তারা বিভিন্ন হাটে গরু বিক্রি করে থাকেন। বিভিন্ন স্থান থেকে গরু কিনে এনে তারা হাটে বিক্রি করেন। ফরিদপুর হাটে বিক্রি করতে না পারলে তারা ঢাকার গাবতলী হাটে গরুগুলো নিয়ে যান। এবছর গরুর দাম তুলনামূলক একটু বেশি বলে জানান তিনি। তিনি জানান, ঈদের সময় গরুর চাহিদা বাড়তি থাকায় দামও বেড়ে যায়। কোরবানির জন্য গরু কিনতে আসা শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লার সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি হাটে এসেছেন গরু দেখতে। তবে, এ হাটে গরু কেনার ইচ্ছা তার নেই। শুধু দাম কেমন তা জানতেই হাটে এসেছেন। আগামী মঙ্গলবার হাট থেকে তিনি গরু কিনবেন বলে জানান। এবছর গরুর দাম বেশি বলে জানান তিনি। আলিপুর মহল্লার ইমরান হোসেন, মাহবুব জামাল বলেন, ঈদের বেশকিছু দিন আগে গরু কিনলে লালনপালন করা কষ্টকর। তাই ঈদের দু-তিন দিন আগে গরু কিনবেন তারা। হাট ছাড়াও বিভিন্ন খামারে গরু লালনপালন করে যারা বিক্রি করেন এবার বিপুলসংখ্যক গরু তারা বিক্রির জন্য তৈরি করেছেন। ফরিদপুর প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবছর ফরিদপুর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৩৬ হাজার। তবে কোরবানির জন্য গরু-ছাগল মিলিয়ে ৫৫ হাজার পশু লালনপালন করা হয়েছে।