শিরোনাম
রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ

সুফলবঞ্চিত স্থানীয়রা, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ

মাছ চাষের জন্য বাগেরহাটের হোজির নদীতে দেওয়া বাঁধ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হোজির নদী দখল করে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে। ভরাট হয়ে যাওয়া এই নদী গত শুষ্ক মৌসুমে পুনঃখনন করে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। পুনঃখননের পর আবারও হোজির নদীর তিনটি স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। ফলে নদীর সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। বাগেরহাট পাউবো বলছে, হোজির নদী পুনঃখননের পর ফের দখল হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তাদের জানা নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জনিয়েছেন বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সরেজমিন দেখা যায়, ডেমা ইউনিয়নের খেগরাঘাট ও কাশিমপুর গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের নিচসহ অন্তত তিন স্থানে বাঁধ দিয়ে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি মাছ চাষের সুবিধার জন্য পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছে। বাঁধের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ঘের পাহারাসহ মাছের খাবার ও বিভিন্ন মালামাল রাখার খুপরি ঘর। এ সময় ঘের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখানে চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে। নদী পাড়ের বাসিন্দা বৃদ্ধ কালাম শেখ বলেন, হোজির নদীতে একসময় বড় বড় নৌকা-লঞ্চ চলতে দেখেছি। এক পর্যায়ে পলি পড়ে গভীরতা কমে ছোট হয়ে যায় নদীটি। তখন থেকেই প্রভাবশালীরা দখল শুরু করেন। এখন নদী দখল করে মাছ চাষ হচ্ছে। ডেমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম হুসি নদী দখল করে মাছ চাষের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি একা না, স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ২০ জন এর সঙ্গে জড়িত। এরা সবাই হোজির নদীর এই ঘেরের অংশীদার। নদীতে বাঁধ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এই বাঁধ আমরা দিইনি। নদী খননের সময় সুবিধার জন্য বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। আমরা শুধু খুপরি ঘর ও নদীর পানি প্রবাহের জন্য একটি পকেট গেট নির্মাণ করেছি। বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, হোজির নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ইতোমধ্যে বাঁধ অপসারণ ও মাছ চাষ না করার জন্য ওই এলাকায় মাইকিং করতে ডেমা ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত বাঁধ অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউপি চেয়ারম্যান মনি মল্লিক বলেন, নদীটি দখলমুক্ত করার জন্য চেষ্টা চলছে। বাগেরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ বলেন, হোজির নদী পুনঃখননের পর ফের দখল করে মাছ চাষের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর