মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই হাত নেই এসএসসি পরীক্ষার্থীর

কাপাসিয়া প্রতিনিধি

দুই হাত নেই এসএসসি পরীক্ষার্থীর

একটি দুর্ঘটনায় দুই হাত কনুই থেকে কেটে ফেলতে হয় নাজমুল হাসানের। তারপরও থেমে থাকেনি তার জীবনের পথচলা। অদম্য শক্তি নিয়ে ঠিকই লেখাপড়া চালিয়ে যান নাজমুল। অংশ নেন এবারের এসএসসি পরীক্ষায়ও। দুই হাত নেই তো কী হয়েছে। কনুই দিয়েই লিখে এসএসসি পরীক্ষায় দিচ্ছেন নাজমুল হাসান। গাজীপুরের কাপাসিয়ার চাঁদপুর ইউনিয়নের কাজাহাজি পূর্বপাড়ার নাজিম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হাসান এখন হাজারো ছাত্র-ছাত্রীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে। লেখাপড়ার প্রতি তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি দেখে অনেকেই বিস্মিত। পরিবার ও বিদ্যালয়-সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে জেএসসি পরীক্ষার পর রাতে ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে দুটি হাত পুড়ে যায় নাজমুলের। পরে দীর্ঘদিন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুই হাতের কনুই দিয়ে লেখার চেষ্টা চালিয়ে যায়। প্রায় দুই বছর চেষ্টার পর দুই হাতের কনুইতে কলম দিয়ে লেখার চেষ্টায় সফল হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকেও তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়। স্থানীয় মৈশাধামনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নাজমুল। রবিবার কাপাসিয়ার চাঁদপুর পরীক্ষা কেন্দ্রে দুই হাতের কনুই দিয়ে নিচু বেঞ্চে বসে এসএসসি পরীক্ষার কৃষি শিক্ষা বিষয় লিখতে দেখা যায় তাকে। নাজমুল হাসান বলেন, আমার জীবনে অনেক স্বপ্ন ছিল, কিন্তু দুই হাতের সঙ্গে আমার স্বপ্নগুলো যেন হারিয়ে গেল। অনেক চেষ্টা করে হাত ছাড়া কনুই দিয়ে লিখতে পেরেছি। আল্লাহ সহায় হলে আমি শিক্ষা জীবনের সবগুলো ধাপ পেরোতে চাই।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র সচিব মোস্তফা কামাল বলেন, নাজমুল হাসান সাধারণ পরীক্ষার্থীদের মতো বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিতে পারে না। নিচু বেঞ্চে বসে এবং খাতা রেখে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয় তাকে। তার জন্য অতিরিক্ত বিশ মিনিট বরাদ্দ থাকলেও নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারে।

 

সর্বশেষ খবর