রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

রংপুর অঞ্চলে ২ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি

চাষ করলে বছরে ১৩ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ২ লাখ ৩৩ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমি রয়েছে অনাবাদি ও অকৃষি। এসব জমি চাষযোগ্য করে আবাদ করলে প্রতি বছর সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি খাদ্যশস্য উৎপাদন সম্ভব। জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের অফসলি ও অনাবাদি জমির অধিকাংশই নদী এলাকায়। ৭০-৮০ শতাংশ নদীতে জেগে ওঠা চর এবং নিচু ভূমি। বাকিগুলো সরকারি খাস অথবা অবৈধ দখলদারদের কাছে পতিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, চরাঞ্চলের জমি চাষযোগ্য করতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, রংপুর অঞ্চলে ৯ লাখ ৫৮ হাজার ২৬৩ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে কৃষি জমি ৭ লাখ ৩৫ হাজার ২০৬ হেক্টর। অকৃষি ২ লাখ ১৩ হাজার ২ হেক্টর এবং সাময়িক পতিত জমি রয়েছে ১০ হাজার ৫৫ হেক্টর। অনাবাদি জমি থেকে প্রতি হেক্টরে গড়ে ৬ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন হলে এক বছরে অতিরিক্ত ১৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব। যা এ অঞ্চলের দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি আবাদ হচ্ছে না। জানা যায়, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে গত চার দশকে এ অঞ্চলের ভূপ্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তনের ফলে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ উত্তরের বিভিন্ন নদী শীত মৌসুমে শুকিয়ে ক্ষীণধারায় প্রবাহিত হয়। আবার বর্ষার সময় দুই কূল ছাপিয়ে প্লাবিত হয়। প্রতি বছর পলি জমে নদীর বুকে জেগে ওঠে অসংখ্য চর। চরের জমি সাধারণত দুই থেকে তিন বছরের মাথায় আবাদ করা যায়। কৃষি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের মতে অনাবাদি জমিগুলো ফসলি জমিতে রূপান্তর করতে পারলে বাড়তি খাদ্যশস্য উৎপাদনের পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ী ঢাকার উপ-পরিচালক (এল আর) আবু সায়েম বলেন, চরাঞ্চলের অনাবাদি জমি চাষযোগ্য করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। চরে দানাদার ফসল ধান, গম, ভুট্টা, রবি সবজি, পাট উৎপাদন করা যেতে পারে। এসব জমি চাষযোগ্য করতে পারলে প্রতি বছর লাখ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি ফসল উৎপাদন হবে। তিনি আরও বলেন, চরাঞ্চল বাদে যেসব জমি পতিত অবস্থায় রয়েছে তার আবাদযোগ্য করতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর