বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ছয় বছর পড়ে আছে ভুটান থেকে আনা পাথর

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ছয় বছর পড়ে আছে ভুটান থেকে আনা পাথর

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে সাড়ে ৬ বছর আগে ভুটান থেকে আমদানি করা পাথর পড়ে আছে। আমদানিকারক ও কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টের কেউ আমদানি করা পাথর নিয়ে না যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে কাস্টমস ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার চকবাজার এলাকার ১০৩/ ১০৪ হরিনাথ ঘোষ রোডের মেসার্স উইন্ডো ইন্টারন্যাশনাল ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ও ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই মোট ১৫ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ কেজি (১ হাজার ৫১৯ টন) ভুটানি স্টোন বোল্ডার আমদানি করে। বৈধ প্রক্রিয়ায় আনা এসব পাথরের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮৮ টাকা। আমদানি করা এই পাথরের বিপরীতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সরকারি শুল্ক বকেয়া রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৯৬৪ টাকা। মেসার্স উইন্ডো ইন্টারন্যাশনালের আনা এই পাথরগুলো স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে ২০১৬ সাল থেকে পড়ে আছে। অন্যদিকে, ঢাকার পুরানা পল্টনের এইচ এম সিদ্দিক মেনশনের মেসার্স এগ্রিপ্লাস লিমিটেড ভুটান থেকে আমদানি করা ৮০ হাজার (৮০ টন) ডলোমাইড পাউডার ২০১৭ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে স্থলবন্দরের ৩ নম্বর শেডে পড়ে রয়েছে। স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরে এসব পণ্য পড়ে থাকায় বন্দরের মাশুল পণ্য বিক্রয়মূল্যের কয়েক গুণে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। পণ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একাধিকবার চিঠি দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আমদানিকারক উভয় প্রতিষ্ঠান পণ্য নেয়নি। এমনকি বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে কোনো প্রকার জবাবও দেয়নি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, কাস্টমস আইনের ১৯৬৯-এর সেকশন ২০১ ও সেকশন ১৮০-এর বিধানমতে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার নোটিস জারি করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য খালাসের জন্য অনুরোধ করা হয়। পণ্য নিতে ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তপূর্বক নিলামে বিক্রি করে সরকারি রাজস্ব আদায় করা হবে। বিষয়টি জানালেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বিগত সাড়ে ৬ বছরেও পণ্য নেয়নি। এরই মধ্যে মেসার্স এগ্রিপ্লাস লিমিটেডের আনা পাথর রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন বলেন, স্থলবন্দরের খোলা মাঠে ও পণ্য রাখার শেডে ভুটান থেকে আনা পাথর ও ডলোমাইড পাউডার অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে বন্দরের মাঠে পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশ করতে সমস্যা হচ্ছে। শেডের জায়গাও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পণ্য খালাস ও বোঝাই কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বুড়িমারী স্থল শুল্ক স্টেশন কাস্টমস সহকারী কমিশনার (এসি) জে এম আলী আহসান বলেন, ঢাকার মেসার্স উইন্ডো ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক আমদানি করা পাথর কাস্টমস আইনের ১৯৬৯-এর সেকশন ৮২ মোতাবেক রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে প্রয়োজনীয় তথ্য রংপুরের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে বাজেয়াপ্তপূর্বক নিলামে বিক্রি করে সরকারি রাজস্ব আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। এরই মধ্যে মেসার্স এগ্রিপ্লাস লিমিটেডের পণ্য একই কাস্টমস বিধি অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং নিলামের প্রক্রিয়া চলছে।

সর্বশেষ খবর