মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত নদীতীরের বাসিন্দাদের

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত নদীতীরের বাসিন্দাদের

মানিকগঞ্জের ঘিওরে পুরনো ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনকবলিত এলাকা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নদীতে বাড়ি ভাঙলে কোথায় যাবেন সালমা বেগম (৭০)। ছেলে ও ছেলের বউ, নাতি-নাতনি নিয়ে তার সংসার। খেয়ে না খেয়ে পড়ে আছেন স্বামীর ভিটায়। পুরনো ধলেশ্বরী নদীর গত কয়েক দিনের তীব্র ভাঙনে ব্রিজসহ সরকারি রাস্তাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সালমা বেগমের বাড়িটি একেবারে নদীর কিনারায়। ভাঙনের ভয়ে তিনি রাতদিন নির্ঘুম সময় পার করছেন। তার মুখে একটাই কথা, ছয় শতাংশের বাড়িটি ভেঙে গেলে তিনি কোথায় যাবেন। সালমার বাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কোশুন্ডা গ্রামে। কান্না জড়িতকণ্ঠে তিনি বলেন, স্বামীর রেখে যাওয়া এই ছয় শতাংশ বাড়ি ছাড়া কিছুই নেই। দুই ছেলে ছিল, একজন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন অনেক আগে। আরেক ছেলের বউ ও নাতি-নাতনি নিয়ে তিনি থাকেন। ছেলের আয় রোজগার নেই বললেই চলে। সরেজমিনে দেখা যায়, নদীপাড়ের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কয়েক দিনের ভাঙনে পেচারকান্দা থেকে ঘিওরের রাস্তায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পেচারকান্দা বাজার থেকে কোনো যানবাহন এই আঞ্চলিক সড়কে চলাচল করতে পারছে না। বিপাকে পড়েছেন এ রাস্তায় চলাচলকারী ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ লোকজন। সেতু ভেঙে যাওয়ায় ঘিওর উপজেলা শহরে এখন কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। অনেকে বিকল্প রাস্তা হিসেবে হেঁটে মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে চলাচল করছেন। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও বেশকিছু বাড়িঘর। আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের লোকজন।

বালিয়াখোড়া ইউপি সদস্য রতন মিয়া বলেন, অপরিকল্পিত খননের কারণে এই মরা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সঠিক নিয়মে খনন হলে নদীর গতিপথ ঠিক থাকত, ভাঙন হতো না। বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আউয়াল খান বলেন, পুরনো ধলেশ্বরী নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন বলেন, কালীগঙ্গা ও  পুরনো ধলেশ্বরী নদী খনন করা হয়েছে। নদী খননের কাজ উত্তরাংশ শেষ না হওয়ায় গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে এবং চর জাগায় ভাঙন শুরু হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর