বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বদলে দিয়েছে জীবনমান

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বদলে দিয়েছে জীবনমান

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পাল্টে দিয়েছে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জীবনের গল্প। এ ঘর অনেকের জীবন পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে। যাদের জীবনের অর্ধেকের বেশি কেটেছে ভাসমান অবস্থায়, ছিল না কোনো স্থায়ী ঠিকানা; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের আধাপাকা ঘরসহ জমির মালিক হয়ে তারা পেয়েছেন ঠিকানা। সেখানেই নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। মোসা. মালা বেগম (৬৫)। সংসারে অসুস্থ স্বামী নান্নুকে নিয়ে কোনোমতে দিন কাটে তার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়েছেন। জীবনসায়াহ্নে নতুন করে সংসারকর্মে মেতেছেন এ দম্পতি। বেশির ভাগ সময় মানুষের বাড়িতে কাজ করে স্বামীর ওষুধসহ সংসারের খরচ জোগান তিনি। শুধু মালা নন, দিতি, সজনী বিশ্বাসসহ উপহারের ঘর পাওয়া নিম্ন আয়ের সবারই স্বপ্ন ও জীবনযাপনে পরিবর্তন এসেছে। হঠাৎ এমন পরিবর্তনে তারা যেমন উচ্ছ্বসিত, তেমনি নতুন করে বাঁচার তাগিদ পেয়েছেন মনে। শুধু নিজের ঘর নয়, পুরো প্রকল্প এলাকায়ই সাজছে তাদের যত্ন ও আবেগে। নারগিস নামে ৪০ বছর বয়সী একজন বলেন, ‘ঘর পাওয়ার পর মুহূর্তের জন্যও এখান থেকে সরি নাই।’ তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল মধুখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন ঘরের বারান্দায়। নারগিস জানান, নিজের এমন ঘর হবে কল্পনাও করেননি তিনি। ঘর পেয়ে সাজিয়েছেন মনের মতো করে। চারদিকে গাছ লাগিয়ে সবুজের সমারোহ সৃষ্টি করে নজর কেড়েছেন অনেকের। উপহারের ঘরের এক পাশে দোকান করে একমাত্র মেয়ে ও মাকে নিয়ে সংসার চলে তার। মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিকুর রহমান চৌধুরি জানান, ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে, যা প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ইউএনওর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর আওতায় এ পর্যন্ত ধাপে ধাপে ৩০৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ অর্থবছরে আরও ১১২টি ঘর নির্মাণ করা হবে। ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা দুই রুমের ঘর করে দেওয়া হয়েছে। রান্নাঘর, টয়লেট, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ, আঙিনায় হাঁস-মুরগি পালন ও শাকসবজি চাষেরও জায়গা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার জন্য এ কাজটি হৃদয়ের বিষয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে গর্বের একটি প্রকল্প। এর মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে।’ ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ঘর পাওয়ারা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা পাচ্ছেন। ফিরে এসেছে তাদের জীবনের ছন্দ। সারা জীবনের দুঃখ-যন্ত্রণা পেছনে ফেলে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছেন উপকারভোগীরা।

সর্বশেষ খবর