ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতনের পর মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে নির্যাতনের শিকার দুই পরিবার। মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বনগ্রামের সোহেল মাতুব্বরসহ ভুক্তভোগী দুটি পরিবারের লোকজন। শনিবার সকালে উপজেলা প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী সোহেল মাতুব্বর বলেন, ‘প্রায় ১০ মাস পূর্বে আমি ও আমার চাচাতো ভাই আবু কালাম মাতুব্বরসহ কয়েকজন বিদেশ যেতে চাইলে ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বনগ্রাম গ্রামের অলিল বেপারী লিবিয়া দিয়ে আমাদের ইতালি নেওয়ার কথা বলেন। পরে তার মাধ্যমে আমরা ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে লিবিয়ায় পাড়ি জমাই। এ সময় ইতালি পাঠানোর জন্য দালাল অলিলের সঙ্গে এক এক জন ৮ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। তার দাবিকৃত টাকা দিলে আমাদের লিবিয়া নিয়ে যায়। এরপর লিবিয়ায় নিয়ে আমাদের কাছে অলিল মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে এবং বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে পাঠায়। পরে জমিজমা বিক্রি করে কয়েক দফায় অলিল ও তাদের লোকজনকে জনপ্রতি ২২ লাখ করে টাকা দিয়েছি। কিন্তু সে আমাদের এত টাকা পেয়েও অন্য একদল মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখান থেকে আমি পালিয়ে দেশে চলে আসি। আমার চাচাতো ভাই আবু কালাম ও অন্য লোকেরা এখনো মাফিয়াদের কাছে জিম্মি রয়েছে। আমরা এই মাফিয়া চক্রের বিচার চাই।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গোপালপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. হালিম হাওলাদার, সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল হক সেরনিয়াবাত, ভুক্তভোগী মনাই মাতুব্বর, মোতালেব মাতুব্বর ও সোহেল মাতুব্বর প্রমুখ।

ভুক্তভোগী মোতালেব মাতুব্বর বলেন, ‘আমার ছেলেকে ফেরত আনার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই। আমার ছেলেকে ফেরত চাই।’ সে এখনো মাফিয়াদের কাছে জিম্মি রয়েছে। ভুক্তভোগী লিবিয়া ফেরত সোহেল মাতুব্বর কান্নাজরিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা এক এক জন ২২ লাখ করে টাকা দিয়েছি অলিল ও তার লোকজনের কাছে। তার পরও আমাদের অন্য মাফিয়ার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা ওর বিচার চাই।’ এ ব্যাপারে ডাসার থানার ওসি তদন্ত মো. মনজুরুল ইসলাম বলেন, বিদেশের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।