২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি রংপুরের মিঠাপুকুরে যাত্রীবাহী নাইটকোচে পেট্রল বোমা মেরে ছয় বাসযাত্রী হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় দগ্ধ হন আরও ২৫ জন। জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছিল উল্লেখ করে মামলা করা হয়। ঘটনার সাত বছর হয়ে গেলেও চাঞ্চল্যকর মামলাটি গতিহীন অবস্থায় রয়েছে। মামলার অধিকাংশ আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। জামিন পাওয়া কয়েকজন আসামি হাই কোর্টে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি এখন স্থগিত আছে। এখনো অনেক আসামি রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামলার গতি ফিরিয়ে আনতে এটর্নি জেনারেল বরাবর আবেদন করেছেন। জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের উলিপুর থেকে খলিল পরিবহনের একটি নাইটকোচ যাত্রী নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। রাত ১টার দিকে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বাতাসন এলাকায় পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা বাসটি লক্ষ্য করে কয়েকটি পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে বাসে আগুন ধরে যায়। দগ্ধ হয়ে এক শিশুসহ মারা যান ছয়জন। অগ্নিদগ্ধ হন আরও ২৫ যাত্রী। তাদের রমেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তথনকার মিঠাপুকুর থানার এসআই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে ৮৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিঠাপুকুর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ১৩২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। রংপুর জজ আদালতে বিচার কাজ চলা অবস্থায় হাই কোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪২ জনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হলেও মূল সাক্ষী অগ্নিদগ্ধ ও নিহতদের স্বজনরা অনেকেই সাক্ষ্য দেননি। সূত্র জানায়, চার্জশিটভুক্ত ১৩২ জনের মধ্যে ১০০ জনের বেশি আসামি গ্রেফতার হয়েছে। অনেকে স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। গ্রেফতারদের মধ্যে বেশির ভাগ জামিনে বের হয়েছেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম তুহিন বলেন, কয়েকজন আসামি উচ্চ আদালতে মামলাটির স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমানে মামলা স্থগিত রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইজীবী মামলাটি চালু করতে সম্প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর আবেদন করেছেন বলে তিনি জানান।