একটি রাষ্ট্র পৃথিবীর বুকে তার নিজস্ব সংস্কৃতি দিয়ে এগিয়ে যায়। তার কৃষ্টি কালচারকে তুলে ধরে প্রতিনিধিত্ব করে বিশ্বজুড়ে। আমাদের সেই পথেই এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ একটি সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধশালী দেশ বলেছেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খান খসরু। নেত্রকোনায় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত স্থানীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী লোকসংগীত উৎসবে শুক্রবার রাতে উদ্বোধনকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, এ দেশের এমন একজন প্রধানমন্ত্রী যিনি বিশ্বাস করেন- ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। প্রধানমন্ত্রীর এই স্লোগানকে ধারণ করে বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু কিছু অপসংস্কৃতি দেশকে বাধাগ্রস্ত করছে। আজ আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনে অপসংস্কৃতি চলছে। যাত্রার নামে যৌন সুরসুরি করা হয়। ফলে যুব সমাজ বিপথে যাচ্ছে।
আকাশ সংস্কৃতির কারণে দেশের সংস্কৃতি ঢাকা পড়ছে। তাই এ সমাজে সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের হারিয়ে যাওয়া লোকসংগীত বাউল গান এগুলোকে তুলে আনতে হবে। যুদ্ধকালীন সময়ের মতো গণজাগরণের গান গাইতে হবে। যে গান মাতিয়ে তুলেছিল আমাদের মুক্তিকামী জনতাকে। দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আর এটি সম্ভব আওয়ামী লীগ সরকার বারবার দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দরকার। এদিকে ‘এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে যেদিন হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান জাতি-গোত্র নাহি রবে’ লালনের এই বাণীকে ধারণ করে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে লোকসংগীত উৎসবে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অসীত সরকার সজল, পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ, ময়মনসিংহ উদীচীর বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক সারওয়ার কামাল রবীন। এতে সভাপতিত্ব করেন নেত্রকোনা জেলা উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান। পরে ঐহিত্যবাহী লাঠিনৃত্য, লোকনৃত্য, গীতিনৃত্য, বিশেষ করে হাওরাঞ্চলের ধামাইল নৃত্যসহ পুতুলনৃত্য পরিবেশিত হয়। সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত শীত উপেক্ষা করে মানুষ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। রাত গভীর হলে শুরু হয় স্থানীয় শিল্পীদের বাউল গান। আর দীর্ঘদিন পরে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ নাচ গান পেয়ে মুগ্ধ শহরবাসী। এমন উৎসব হলে অপসংস্কৃতি দূর হয়ে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চায় জাতি উপকৃত হবে বলেও তাঁরা মনে করেন।