রবিবার, ২৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেড় মাস স্কুলে আসেন না প্রধান শিক্ষক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে বেড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে সদর উপজেলার ঝলঝলি পুকুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে। এদিকে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে প্রধান শিক্ষক কর্মস্থলে না থাকায় বিপাকে রয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, ১৯৯২ সালে সদরের ঢোলারহাট ইউনিয়নে স্থাপিত হয় ঝলঝলি পুকুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারী সংখ্যা ১৪ জন। এ ছাড়া ষষ্ঠ হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ২৪১ জন। এদিকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অখিল চন্দ রায় দীর্ঘ দেড় মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি কোথায় বা কী অবস্থায় রয়েছেন কেউ তা বলতে পারছেন না। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক অতুল চন্দ্র বর্মণ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেও তাকে কাগজে কলমে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়নি। তারপরও তার স্বাক্ষরে ফেব্রুয়ারি মাসের মাসিক বিল সিটি ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক কী কারণে বিদ্যালয়ে আসেন না সে বিষয়ে কেউ কোনো কিছু বলতে পারছেন না। খবর নিয়ে জানা যায়, বছর খানেক পূর্বে ওই বিদ্যালয়ে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ড, আয়া, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও অফিস সহায়ক পদে লোক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। যথারীতি বেশ কয়েকজন প্রার্থী আবেদনও করে। কিন্তু কমিটির লোকজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বেশিদূর এগোতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন পদে নিয়োগপ্রত্যাশী প্রার্থীদের কাছে একই পদে ততধিক প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রধান শিক্ষক। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় তিনি নিয়োগ দিতে পারছেন না। এদিকে প্রধান শিক্ষকের চাকরির বয়সসীমা শেষ পর্যায়ে। ২০২৫ সালের প্রথম দিকে তিনি চাকরি হতে অবসর গ্রহণ করবেন। এ অবস্থায় ২-১ জন প্রার্থী চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত পেতে প্রধান শিক্ষককে চাপ দিয়ে আসছেন। এ অবস্থায় তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক অতুল চন্দ্র বর্মণ জানান, প্রধান শিক্ষক বেশ কিছুদিন থেকে বিদ্যালয়ে আসছেন না। তিনি লিখিতভাবে আমাকে দায়িত্ব অর্পণ না করলেও প্রধান শিক্ষকের মৌখিক নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য হঠাৎ ঢাকায় চলে আসি। তড়িঘড়ি ঢাকায় আসায় কাউকে লিখিতভাবে দায়িত্ব অর্পণ করতে পারিনি। সহকারী প্রধান শিক্ষককে ফোনে নির্দেশ দিয়েছি। এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক ছাড়া কোনো বিদ্যালয় চলতে পারে না। তাছাড়াও তিনি চিকিৎসা বা অন্য কাজে বাইরে গেলে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। বিনা ছুটিতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর