বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএর উদাসীনতায় পানির অভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাঠে মরছে কৃষকের প্রায় ৮০ বিঘা জমির ইরি ধান। পানির অভাবে খেত ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। তবে বিএমডিএ নিজেদের দায় এড়িয়ে দোষ চাপাচ্ছেন কৃষকদের ওপর। এ নিয়ে কৃষক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা গেছে, সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মোল্লান মাঠে ডিজেলচালিত একটি সেচ যন্ত্র রয়েছে এবং এর অধীনে প্রায় শত বিঘা জমি রয়েছে। এরমধ্যে ইরি ধান রয়েছে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে। এ ছাড়া আম গাছ রয়েছে ১০ বিঘা জমিতে। আর পানির অভাবে অনাবাদি পড়ে রয়েছে আরও প্রায় ১০ বিঘা জমি। তবে বর্তমানে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচযন্ত্রে চাহিদামতো পানি উঠছে না। কৃষকরা জানান, এসব জমিতে সেচ দিতে হয় ডিজেলচালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে। কিন্তু ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তবে বিদ্যুৎচালিত সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি দেওয়া হলে খেতে ফসল ফলানো সম্ভব হতো বলে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের অভিমত। এদিকে জমিগুলোতে সেচ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে বাদল আলী নামে এক কৃষক গত ১৬ মার্চ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, রামকৃষ্ণপুর জেএল নং ১৪২, দাগ নং-৩৭১১ এবং খতিয়ান নং ৫৮১’তে মোল্লান মাঠে ডিজেলচালিত একটি সেচ যন্ত্র আছে। ফলে গত বছরের ২১ নভেম্বর বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বিএমডিএ অফিসে অনুমতির জন্য আবেদন করা হলেও এখনো ছাড়পত্র মিলেনি। ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলে কৃষকের ইরি ধান মরে নষ্ট হয়ে যাবে। অন্যদিকে আকবর নামে এক কৃষক জানান, বিএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনের সময় অফিস থেকে জানানো হয়, ওই জমিতে ধান চাষ শুরু করেন দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। পরিপ্রেক্ষিতে তাদের মৌখিক আশ্বাসে ধান লাগিয়ে দুই মাস পার হলেও এখনো বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি দিচ্ছে না। এতে তার জমিতে লাগানো পাঁচ বিঘা জমির সব ধান মরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও রেজাউল করিম নামে এক কৃষক বলেন, সেচ যন্ত্র মালিকের আশ্বাসে তিন বিঘা জমিতে ইরি ধান চাষ করেছেন তিনি। এতে প্রতি বিঘা জমিতে দুই মাসেই ১৬-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ধানে শীষ ফোটার সময় কিন্তু পানি না পেলে জমির সব ধান রোদে শুকিয়ে মরে যাবে। ইতোমধ্যে জমির পুরো মাঠ শুকিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, দ্রুত বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র পেলেই বিদ্যুৎচালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে ধানগুলো বাঁচানো সম্ভব হবে। এ ছাড়াও আবু সাইদ নামে আরেক কৃষক বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে ১৫দিন আগে শাক-সবজির বীজ ও ৩৫ কেজি সারসহ বিভিন্ন উপকরণ পেয়েছেন তিনি। তবে জমিতে সেচ দিতে না পারায় তার কৃষি উপকরণ বাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএর পরির্দশক মঞ্জুর হোসেন বলেন, দুই দফায় এ বিষয়ে মিটিং হয়েছে।
আগামী জুন মাসের দিকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তবে মৌখিকভাবে কৃষকদের ধান চাষের অনুমতি দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। এ ব্যপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকল ইসলাম বলেন, আমরা মূলত সেচ লাইসেন্স দিয়ে থাকি। বিষয়টি নিয়ে মিটিং হয়েছে, আশা করছি কৃষক দ্রুত লাইসেন্স পেয়ে যাবে।