গাজীপুরের শিরিরচালা এলাকা থেকে অপহরণের ছয় দিন পর অপহৃত তিন মাস বয়সী শিশুকে উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশ। এ সময় তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তারা হলেন- মজলুর স্ত্রী আল্পনা উরফে রুবিনা (২৫), আবুল কাশেমের স্ত্রী ফাতেমা (৩৫) ও রফিকুল ইসলাম (১৯)। গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম জানান, গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন শিরিরচালা এলাকায় মো. ফিরোজ হোসেন তার স্ত্রী ও তিন মাসের শিশু ফাতেমা এবং শাশুড়িকে নিয়ে ওই এলাকায় জনৈক মাজহারুল ইসলামের বাড়িতে দুই মাস ধরে ভাড়া থাকেন। ফিরোজ হোসেন রাজমিস্ত্রির কাজ ও তার স্ত্রী একটি গার্মেন্টে চাকরি করেন। তাদের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার মহেষপুর থানার বিশ^নাথপুর গ্রামে। ২ এপ্রিল প্রতিদিনের মতো মেয়েকে শাশুড়ির কাছে রেখে স্বামী ও স্ত্রী কর্মস্থলে গেলে একই বাড়ির ভাড়াটিয়া আল্পনা (রুবি) সুযোগ বুঝে শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে শিশুটির বাদী হয়ে গাজীপুর থানায় মামলা করেন।

পরে শিশুটির পিতা বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় অপহরণ মামলা করলে এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৭ এপ্রিল গভীর রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন মুলাইদ পশ্চিমপাড়া এলাকার সুবেদ আলীর ভাড়া বাসা থেকে কন্যাশিশুটিকে উদ্ধার ও বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তিনি আরও জানান, গত ২০ মার্চ মূল অপহরণকারী আল্পনা ওরফে রুবিনা একই বাড়িতে তাদের পাশের একটি রুম ভাড়া করেন। তিনি কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করেননি। বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় জাতীয় কিংবা অন্য কোনো পরিচয়পত্র জমা দেননি। তিনি শিশুটির পরিবারের সঙ্গে নানা কৌশলে মিশে সখ্যতা তৈরি ও তাদের বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। ২ এপ্রিল শিশুটির পিতা-মাতা শিশুটিকে বৃদ্ধ শাশুড়ির কাছে রেখে যার যার কর্মস্থলে যান। এ সময় শিশুটি কান্নাকাটি করলে বাদীর শাশুড়ি শিশুটির জন্য দুধ গরম করতে যায়। তখনই (সকাল সাড়ে ১০টার দিকে) আল্পনা ওরফে রুবিনা সুকৌশলে শিশুটিকে অপহরণ করে নিজের রুমে ঢুকে ভিতর থেকে দরজার ছিটকিনি বন্ধ করে এবং গ্রিল ছাড়া জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।