সোমবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

৬০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ ৬০০ মিটার সড়কে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

৬০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ ৬০০ মিটার সড়কে

মাত্র ৬০০ মিটার সড়ক ১১ বছর ধরে সংস্কার না করায় খানাখন্দের কারণে ওই পথে চলাচলকারী ৬০ হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের অধীন পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় ১১ বছর আগে সংস্কার করা হয়েছিল। চার বছর ধরে সড়কটি অযত্ন-অবহেলায় এখন চরম বেহাল দশায় রয়েছে। সড়কটি জেলার তিন উপজেলার প্রবেশমুখ হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ চলাচল করেন ওই রাস্তায়। বর্তমানে সড়কটির পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বর্ষায় রাস্তাটি কাদাপানিতে ডুবে থাকে আর খরার সময় ধুলাবালিতে থাকে পরিপূর্ণ। এ ছাড়া কোনো রোগী ওই রাস্তায় চলাচল করলে তাকে পোহাতে হয় নানা রকম ঝুঁকি। অন্যদিকে রাস্তার পাশের দোকানিরা ধুলাবালির হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার পৌরসভার পানি রাস্তায় ফেলছেন। তবে রাস্তাটি সংস্কারে কয়েকবার মাপজোখ করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারে কার্যত কিছুই চোখে পড়ছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করার আশ্বাস দিলেও তাদের আশ্বাসেই ঘুরপাক খাচ্ছে রাস্তাটির ভবিষ্যৎ। কারণ দৃশ্যমান কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সূত্রমতে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর অন্যতম পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় রাস্তাটির আনুমানিক দৈর্ঘ্য ৬০০-৭০০ মিটার পর্যন্ত। সড়কটির একপ্রান্তে রয়েছে জেলা পরিষদ কার্যালয়। নেসকোর বিতরণ বিভাগ-১ ও ২ কার্যালয়। আরেক প্রান্তে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জেলা কার্যালয়। ফায়ার সার্ভিস উপ-সহকারী পরিচালকের কার্যালয়সহ ৫৩ বিজিবি কার্যালয়। এসব সরকারি অফিসের প্রধানসহ জেলার গোমস্তাপুর, নাচোল, ভোলাহাট, আমনুরা এলাকার প্রায় ৬০ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন। তিন উপজেলার প্রবেশদ্বার জনবহুল এই রাস্তাটি বছরের পর বছর মেরামত না হওয়ায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও পাথরের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না। খানাখন্দে পানি জমে থাকায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি সড়কে চলাচলকারীদের। এদিকে বিভিন্ন সময় সড়কটিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে মাটি ফেলা হয়েছিল। যদিও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি জেলা পরিষদের। রাশিদুল ইসলাম নামে এক পিকআপচালক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের মধ্যে ঢোকার জন্য এই রাস্তাটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে।

ফলে রাস্তাটিতে যাতায়াতে অনেক সময় গাড়ির নাটবল্টু খুলে পড়ে। অন্যদিকে আলম নামে এক পথচারী জানান, রাস্তাটিতে যাতায়াতের সময় রিকশা-অটোরিকশার যাত্রীরা দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই এই পথে যাতায়াত করেন। আর সড়কটিতে যাতায়াতে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীরা। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আফাজ উদ্দিন জানান, জেলা পরিষদের এই রাস্তাটি সংস্কার করতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সে পরিমাণ অর্থ বাজেটে সংকুলান হবে না। যার কারণে রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে ন্যস্ত করতে আবেদন করা হয়েছে। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরিন ঝিনুক বলেন, শহরের পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস মোড় পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি আমাদের ন্যস্ত করতে আবেদন করেছে জেলা পরিষদ। সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে রাস্তাটির মালিকানা পরিবর্তনের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এ রাস্তাটি গেজেট আকারে অনুমোদন হয়ে এলে সংস্কারের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।

সর্বশেষ খবর