রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

সড়ক নির্মাণে ধীরগতিতে সীমাহীন দুর্ভোগ

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি

সড়ক নির্মাণে ধীরগতিতে সীমাহীন দুর্ভোগ

চ্যাংমারীপাড়া-পোড়ারহাট জিসি সড়ক নির্মাণকাজ চার বছরেও শেষ হয়নি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সৈয়দপুরে-রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। তিন দফা সময় বাড়িয়েও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। কবে নাগাদ শেষ হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্ট দফতর। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষ চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। চুক্তি মোতাবেক ২০ মাসে সড়ক নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও ৫১ মাসেও শেষ হয়নি। উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের চ্যাংমারী পাড়া- পোড়ারহাট জিসি সড়ক নির্মাণে ঘটেছে এমন ঘটনা। দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০ ফুট প্রস্থের এ সড়কটি নির্মাণে সরকার বরাদ্দ দেয় ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান মেসার্স খায়রুল কবির রানা নামক প্রতিষ্ঠান।

সৈয়দপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দফতর জানায়, ওই সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি। চুক্তিমতে কাজ শেষ করার কথা ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর। ২০ মাসে সড়কটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে বারবার দেওয়া হয় তাগাদা। বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করা তো দূরের কথা, তিন দফা সময় বাড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চাপে কাজ শেষ করার মেয়াদও বারবার বৃদ্ধি করেছেন। এরপরও কাজে গতি ফিরছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বছরের পর বছর কাজ চলায় সীমাহীন জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, ১০ ফুট চওড়া রাস্তা স্থানভেদে সাড়ে ৯ থেকে পৌনে ১০ ফুট করা হয়েছে। রাস্তায় খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইটের। রেজিং দেওয়া হয়েছে মানহীন ইট দিয়ে। এমনকি রাস্তার দুই পাশের মাটি করা হয়নি কমপ্যাক্ট। সড়কে খোয়া বিছানোর আগে বালু ও পানি পরিমাণমতো ব্যবহার করা হয়নি। রোলার চালিয়ে বালু দিয়ে রাস্তার করা হয়নি বেডও। ফলে কাজ শেষ হলেও এর জীবনকাল স্বল্প হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হতে চললেও সড়কের কাজ শেষ হচ্ছে না। এ অবস্থায় আসন্ন বর্ষাকালে স্থানীয়দের চলাচলে চরম বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে। আবার যতটুকু কাজ হয়েছে বা হতে চলেছে তাও নিম্নমানের। এ জন্য তারা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতরের কর্তাব্যক্তিদের নির্মাণকাজে অধিকতর তদারকির দাবি জানিয়েছেন। কাজের ধীরগতি ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে জানতে অনেক চেষ্টা করেও ঠিকাদার খায়রুল কবির রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা প্রকৌশল দফতরের তথ্যমতে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আবদুস সবুর আলমের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তাকেও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু কাজের ধীরগতির কথা স্বীকার করে বলেন, অনেকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কাজে অনিয়মের বিষয়ে বলেন- ডিপিসি টেস্ট এবং এলএএ ভ্যালু না থাকলে ঠিকাদার বিল পাবেন না।

সর্বশেষ খবর