বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রভাবশালীদের কবজায় ছোট ফেনী

জমির বেগ, ফেনী

প্রভাবশালীদের কবজায় ছোট ফেনী

নদীর জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ

ছোট ফেনী নদীর জায়লস্কর ইউনিয়নের বারাহি গোবিন্দ অংশটি একসময় চওড়া ছিল ১৭০-১৮০ ফুট। কালের আবর্তে সেখানে এখন নেই নদীটির স্মৃতিচিহ্নও। শত শত প্রভাবশালী গিলে খেয়েছে নদীটির প্রায় ২ কিলোমিটার অংশ। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে বাংলাদেশে যে ভয়াবহ দুর্যোগ আসছে তার মধ্যে নদী হত্যা অন্যতম কারণ। বিভিন্ন নদীতে নাব্য কমে যাওয়ার পর তা ফিরিয়ে আনতে সরকার নিচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ। ইতোমধ্যে ৮০০ কিলোমিটার নদীপথ খনন করেছে। বড় প্রকল্পগুলো হাতে নেওয়ায় অনেক নদীর নাব্যও ফিরে পাচ্ছে। আর সেখানে একের পর এক নদী দখল করা হচ্ছে। জানা যায়, নদীর মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ড হলেও বিভিন্ন প্রশাসনের নীতিমালায় উপজেলা প্রশাসন নদী পাড়ের ভূমি দিতে পারে বন্দোবস্ত। সে সুযোগে বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রশাসন থেকে নদীর পাড়ে হাঁস-মুরগির খামার ও কৃষিকাজ করার কথা বলে কেউ কেউ নিয়েছেন নদীটির বিভিন্ন অংশ বন্দোবস্ত। নদীর পাড় বন্দোবস্ত নিয়ে এক সময় তারা দখল শুরু করেন মূল নদী। গিলে খেয়ে ফেলেন পুরো নদী। আবার কেউ কোনো রকম বন্দোবস্ত ছাড়াই দখল করে আছেন নদীটি। নদীটিতে বর্তমানে রয়েছে রাস্তা, দোকানপাট, মানুষের ঘরবাড়ি। জানা যায়, বর্তমানে মোল্লাঘাটা থেকে সদর উপজেলার কাশিমপুর পর্যন্ত নদীর ওপর দিয়ে রয়েছে আটটি সড়ক। ২৬৫৩ দাগেই রয়েছে এলজিইডির চারটি সড়ক। নদীর ওপর বাড়ি নির্মাণকারীদের মধ্যে একজন জায়লস্কর হাই স্কুলের অফিস সহকারী রাজিয়া সুলতানা বলেন, আমার স্বামী জমিটি বন্দোবস্ত নেওয়ার পর থেকে (১৯৮৯ সাল থেকে) আমরা এখানে বাড়িঘর করে বসবাস করছি। ২০০১ সালে আমি এখানে পোলট্রি ফার্মও করেছি। বাড়িঘর শুধু আমরাই তৈরি করিনি, আমাদের মতো শত শত লোক এখানে বন্দোবস্ত নিয়ে বাড়ি ও দোকানপাট নির্মাণ করেছেন। তিনি বলেন, একটি মহল আমার কাছে টাকা চায়, চাঁদা দাবি করে, তারা আমার কাছে জমি চায়। আমি না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন বলেন, ছোট ফেনী নদীর এ অংশ দখল হয়ে গেছে। এটি দখলমুক্ত করে নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এখনই প্রয়োজন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন বলেন, নদীটি আমরা কাউকে ইজারা দিইনি। উপজেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়েছে কি না জানা নেই। জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেব।

সর্বশেষ খবর