সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক উপজেলায় ১৫ অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

এক উপজেলায় ১৫ অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার

অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বেসরকারিভাবে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যত্রতত্র গড়ে ওঠা ১৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হাতেগোনা দুটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন থাকলেও অন্যগুলো চলছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। অবাধে চলছে লাইসেন্সবিহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। দীর্ঘদিন প্রশাসনের চোখের সামনে দাপটের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে মানহীন এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এ ছাড়া কয়েকটি ফার্মেসিতে অবৈধভাবে চলছে ল্যাবরেটরি টেস্ট ও আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা। সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কীভাবে এসব প্রতিষ্ঠান চলছে তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে সচেতন মহলে। জেলার সংশ্লিষ্ট দফতরের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চলছে মানহীন এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এমন অভিযোগও রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা সদরে ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ছোঁয়া হাসপাতাল, পোল ঘাটবাজারে সেবা ডায়াগনস্টিকসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অন্তত ১৩টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যে প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়ার মতো মানও নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা দিচ্ছেন ফার্মাসিস্ট ও ডিএমএফরা। নামের সামনে লিখে রেখেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সার্টিফিকেটবিহীন ভুয়া এসব সাইনবোর্ডধারী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। অভিযোগ পেলে নামমাত্র অভিযান পরিচালনা করেন সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা। যার ফলে দু-এক দিন পরেই দোকান খুলে আবার আগের মতো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে দেখা যায়। এ কারণে যেভাবে প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ সেভাবে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

সরেজমিন দেখা গেছে, সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ছোঁয়া ফার্মেসিতে চলছে আলট্রাসনোগ্রামের কার্যক্রম। সেখানকার প্রোপাইটর গৌতম কুমার ডাক্তার না হয়ে নিজের নামের সামনে ডাক্তার লিখে দিচ্ছেন চিকিৎসা, নিজেই করছেন আলট্রাসনো। কয়েকমাস আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ছয় মাস জেল হয়েছে। জামিন হওয়ার পরে আবারও দাপটের সঙ্গে চালাচ্ছে একই কার্যক্রম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অফিস ম্যানেজ করা আছে। নাইলে উপজেলা সদরে আমি প্রতিষ্ঠান কীভাবে চালাই। কাজির হাওলা গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা রোগীরা তো জানি না কে ডাক্তার আর কে ডাক্তার না। মাইকে প্রচার শুনে চিকিৎসা নিতে যাই। চিকিৎসা নেওয়ার পরে টাকা পয়সা খরচ করে পরে শুনি যে তিনি ডাক্তার না। এভাবে আমাদের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। কাউখালী গ্রামের মহিউদ্দিন বলেন, মাইকে শুনেছি ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিদিন এমবিবিএস ডাক্তার চিকিৎসা দেয়। গিয়ে দেখি গোলাম সরোয়ার  সৈকত নামে একজন ডিএমএফ চিকিৎসা দিচ্ছেন তাই আমি চিকিৎসা না নিয়ে চলে আসি। কিন্তু আমাকে তার কাছে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য অনেক বুঝানো হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, আমরা কয়েকমাস আগে অভিযান করেছি। নতুন করে যেসব প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে চলছে আপনাদের কাছে ম্যাসেজ থাকলে আমাদের দিন। আমরা ব্যবস্থা নেব।

সর্বশেষ খবর