বুধবার, ৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

গোড়াপচা রোগে ঝরছে পান

দিনাজপুর প্রতিনিধি

গোড়াপচা রোগে ঝরছে পান

দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টি ও তীব্র দাবদাহের কারণে দিনাজপুরের হাকিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকার পানের বরজে দেখা দিয়েছে গোড়াপচা রোগ। পচন ধরে সম্পূর্ণ গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। ঝরে পড়ছে পান। ওষুধে কাজ হচ্ছে না। লোকসানের আশঙ্কায় চাষিরা। অনেকে পুঁজি হারানোর ভয়ে বরজ তুলে ফেলছেন। কাজ হারিয়ে বিপাকে এর সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরাও। হাকিমপুরের পান গাছে বিভিন্ন ধরনের পচন রোগ দেখা দেওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পানচাষিরা। স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে পান গাছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কৃষি অফিস রোগ মুক্তির ব্যাপারে জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম। হাকিমপুরের সীমান্তবর্তী খট্টামাধবপাড়া ইউপির ঘাসুড়িয়া, ঘনশ্যামপুর ও মাধবপাড়া এলাকায় বিস্তৃীর্ণ এলাকাজুড়ে পানের বরজ গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের অনেক মানুষ পানচাষের ওপর নির্ভরশীল। আবার ঋণ নিয়ে অনেক বেকার যুবকও পানচাষে ঝুঁকছেন। এখানকার উৎপাদিত পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু কয়েকদিন থেকে জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রচ- দাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পানের গোড়া ও পাতা পচা রোগ দেখা দিয়েছে। পানের বরজে রোগের আক্রমণে দিশাহারা চাষিরা। ঘাসুড়িয়ার পান চাষিরা বলছেন- অনাবৃষ্টি ও গরমের কারণে পানের পাতাপচা ও গাছের গোড়াপচা রোগসহ নানা রোগ বালাই ছড়িয়ে পড়েছে পানের বরজে। শুকিয়ে যাচ্ছে পানপাতা। গাছ থেকে ঝরে পড়ছে পান। আর্থিক ক্ষতি নিয়ে বিপাকে চাষিরা। যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে বরজ করেছি, পান বিক্রি করে সেই টাকা উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। ঘাসুরিয়া গ্রামের পানচাষি মনছুর আলী জানান, দুই বিঘা জমিতে পান চাষ করেছি। কয়েক দিন থেকে তার পানের গোড়া ও পাতা পচা রোগ দেখা দিয়েছে। কোনো ওষুধে কাজ হচ্ছে না। লাভের আশায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পান চাষ করেছি। এখন দেখছি লাভ তো দূরের কথা বড় ধরনের লোকসান গুণতে হবে। বরজের কয়েক শ্রমিক বলেন, পচন ধরে বরজের পান পড়ে যাচ্ছে। আগে কয়েক শ শ্রমিক প্রতিদিন বরজে পান উঠানোসহ বিভিন্ন কাজ করতেন। কিন্তু এখন সাত দিনে এক দিন কাজ হয়।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, অনাবৃষ্টি আর দাপদাহে পানের গোড়ায় পচন দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কৃষকদের ক্ষতির মুখ থেকে বাঁচাতে অনুমোদিত কিছু ছত্রাকনাশক, জৈব বালাইনাশক ব্যবহারের পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। হাকিমপুরের খট্টামাধবপাড়া ইউপির ঘাসুরিয়া, মাধবপাড়া ও  ঘনস্যামপুুর গ্রামের প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে ৩৫০টি পানের বরজ গড়ে উঠেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর