সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

৫ লাখ টাকার সরকারি ভবন ৮৬ হাজার টাকায় বিক্রি

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

৫ লাখ টাকার সরকারি ভবন ৮৬ হাজার টাকায় বিক্রি

বগুড়ার শেরপুরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের পরিত্যক্ত ভবন নামমাত্র মূল্যে নিলামে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যথাযথ প্রচারণা না চালিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনেকটা গোপনেই এ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫ লাখ টাকা মূল্যের সরকারি ভবন মাত্র ৮৬ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হলেও সংঘবদ্ধ ওই সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যদের পকেটে উঠেছে লাখ লাখ টাকা। জানা যায়, কিছুদিন আগে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান কার্যালয় ভবনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে এটি অপসারণ করার জন্য নিলাম দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ নিলাম কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন ও তার দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু যথাযথ প্রচার-প্রচারণা না চালিয়ে সরকারি ওই ভবনটি নিলাম দেন তিনি। এক্ষেত্রে সরকারি কোনো নিয়মই মানা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, বহুল প্রচার ও প্রসারের জন্য নিলাম বিজ্ঞপ্তিটি পত্রিকায় দেওয়া হয়নি। উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে টানানো হয়নি কোনো নোটিস। এ ছাড়া মাইকযোগেও কোনো প্রচার চালানো হয়নি। প্রকৌশলীর নিজের পছন্দের লোকজন ছাড়া নিলামের বিষয়টি তেমন কেউই জানেন না। তাই নিলাম ডাকে সর্বনিম্ন মূল্য ধরেন মাত্র ৭৫ হাজার ৮০০ টাকা। এ ছাড়া কাগজ-কলমে ২০০ টাকা মূল্যের দরপত্র ৬৪টি বিক্রি দেখানো হলেও কাক্সিক্ষত সংখ্যক দরপত্র জমা পড়েনি। মাত্র চারটি দরপত্র জমা দেখিয়ে ৭ জুন দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে অনেকটা গোপনেই নামমাত্র মূল্যে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকায় বগুড়ার মেসার্স বুলবুল ট্রেডার্সের নিকট সরকারি ভবনটি বিক্রি করা হয়। পরবর্তীতে সেটি আবার চারগুণ বেশি দামে বিক্রি করে এবং টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। পুরনো স্থাপনা ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সোলায়মান আলী জানান, সরকারি ভবন নিলামের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। তাই দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ পাইনি। এ ছাড়া নিলামের বিষয়টি পত্রিকায় বা মাইকে প্রচার-প্রচারণা দেখতে বা শুনতে পারেননি। জানলে অবশ্যই দরপত্র কিনে জমা দিতাম এবং ডাকে অংশগ্রহণ করতাম। আর আমরা অংশ নিলে অবশ্যই সরকারি ওই ভবনটি বেশি দামে বিক্রি করা সম্ভব হতো। সরকার অনেক বেশি রাজস্ব পেত। উপজেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন জানান, নিলাম বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দেওয়ার নিয়ম নেই। তাই এটি করা হয়নি। মাইকযোগে প্রচার-প্রচারণা না হলেও নোটিস জারির মাধ্যমে সবাইকে জানানো হয়েছে। দরপত্রের যথাযথ নিয়ম মানা হয়েছে। শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা জানান, সরকারি ওই ভবনটি নিলামের দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী। তাই প্রচার-প্রচারণা চালানো তারই দায়িত্ব। সেটি যথাযথ ভাবে করা হয়েছে বলেই জানি। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে অবশ্যই আমার নিকট অভিযোগ আসত। কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। এরপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

সর্বশেষ খবর