রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেহাল ৫ কিলোমিটারে দুর্ভোগ

প্রায়ই যন্ত্রাংশ ভেঙে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন

আমিনুল হাসান শাহীন, গোপালগঞ্জ

বেহাল ৫ কিলোমিটারে দুর্ভোগ

কাশিয়ানী উপজেলার দস্তন-কদমি সড়ক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার দস্তন-কদমি পাঁচ কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। কোথাও সড়কের মাঝখান দেবে গেছে। বর্ষা শুরু হতেই কাদাপানিতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যানবাহন চালক ও যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। ইটের তৈরি এইচবিবি রাস্তার পরিবর্তে পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী অর্থবছরে কার্পেটিং করার পরিকল্পনা রয়েছে। জানা যায়, কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের দস্তন গ্রাম। আর অন্য প্রান্তে রয়েছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কদমি গ্রাম। দস্তন-কদমি সড়কটি দুই উপজেলাকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে মিলিত করেছে। ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ কাশিয়ানীর জয়নগর বাজারে প্রয়োজনীয় মালামাল বেচাকেনা করেন। এই বাজারে যাওয়া-আসার সুবিধার জন্য ১২ বছর আগে নির্মাণ করা হয় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রস্থের ইটের এইচবিবি সড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় অধিকাংশ স্থানে ইট সরে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে মাটি বা কাদা জমে একাকার হয়ে যায়। প্রতিদিন এ সড়কে শত শত ভ্যান, ইজিবাইক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রায়ই যন্ত্রাংশ ভেঙে নষ্ট হচ্ছে যানবাহন। যাতায়াতেও সময় বেশি লাগছে যাত্রীদের। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও রোগীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। এই সড়কে একটি ছোট সেতু রয়েছে। ওই সেতুর অ্যাপ্রোচ ঠিক না করায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এলাকার উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। ভাঙা সড়কের কারণে পণ্য নিয়ে ভ্যানচালকরা যেতে চান না। গেলেও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। ভ্যান চালক সোহাগ বলেন, সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইট উঠে খানাখন্দ হয়েছে। সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম খান বলেন, এ সড়কের অনেক জায়গা ভাঙা। কয়েক বছরে কোনো কাজ হয়নি। এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা চাই সড়কটি দ্রুত মেরামত করা হোক। যাত্রী জুয়েল শেখ বলেন, সড়কটি উঁচু এবং পিচের (কাপের্টিং) সড়ক করা উচিত। তা না হলে বর্ষায় কাদা জমে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ইজিবাইক চালক সজীব বলেন, দস্তন-কদমি সড়কটি বেহাল থাকায় অনেক সময় যাত্রী নিয়ে আসতে পারি না। এই সড়কে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। এতে লোকসান হয় আমাদের। কদমি গ্রামের বাসিন্দা নাগর আলী বলেন, প্রতিদিন বাজার করতে গোপালগঞ্জের দস্তন গ্রামে যেতে হয়। করুণ অবস্থার কারণে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ইচ্ছা হয় না। কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান মিয়া বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। ইটের তৈরি হওয়ায় মানুষের খুব সমস্যা হয়। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সরকার যেন দ্রুত সড়কটি কার্পেটিংসহ সম্প্রসারণ করে সে দাবি জানাচ্ছি। গোপালগঞ্জের স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, দস্তন-কদমি এইচবিবি সড়ক। সড়কের কিছু স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৩-২৪ অর্থবছরে সম্প্রসারণসহ সড়কটি কার্পেটিং করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর