রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

লালমনিরহাটে বেহাল কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা

সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটে বেহাল কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা

বেশির ভাগ সময় তালাবদ্ধ থাকে দালালপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লালমনিরহাটে ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষ। সরকার গ্রামীণ জনপদের অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য এসব কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তার কারণে এর উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর স্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রাম পর্যায়ে টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা, জন্মনিয়ন্ত্রণ, মা-শিশুর স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা দেওয়ার কথা। কিন্তু হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের দায়িত্বে অবহেলা এবং অনিয়মিত অফিস করার কারণে গ্রামের বৃহৎ জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সানিয়াজান ইউনিয়নের আরাজি শেখ সুন্দর কমিউনিটি ক্লিনিকে দুপুর ২টার দিকে গিয়ে দেখা যায় তালাবদ্ধ। সেখানকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সঙ্গে বলেন, অফিস টাইম সকাল ৯ থেকে দুপুর ৩টা। প্রতিদিন আমাদের রিপোর্ট পাঠাতে হয়। অফিসে নেটওয়ার্ক পায় না তাই বাড়ি চলে এসেছি। পশ্চিম বিছনদই কমিউনিটি ক্লিনিকে দুপুর ১টায় গিয়ে দেখা যায় অফিস তালাবদ্ধ। সেখানকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মুঠোফোনে বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী অফিসে টিকা দেওয়ার কথা তাই আমি অফিস যাইনি। পশ্চিম বিছনদই গ্রামের নুর ইসলাম ও রতন নামে দুই ব্যক্তি বলেন, কোনো কোনো দিন তারা অফিস খোলেন এবং ১টার মধ্যে চলে যান। আজ অফিসই খোলেনি। বাড়াইপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে অফিসে তালা। সেখানকার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বলেন, সকালে অফিসে গিয়েছিলাম। বাচ্চা সঙ্গে থাকায় ১২টার দিকে বাসায় চলে এসেছি। ওই এলাকার বিকাশ চন্দ্র, নুর মোহাম্মদ ও রাকিব বলেন, ম্যাডাম মাঝে মধ্যে এসে ১-২ ঘণ্টা থেকে চলে যান। কালিগঞ্জ ও আদিতমারি উপজেলার অন্তত সাতটি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, সেগুলো দুপুর ১টার পরই বন্ধ হয়ে গেছে। সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো তথ্য দেওয়ার জন্য আমরা বসে নেই। জেলার স্বাস্থ্যসেবা খুব ভালোভাবে চলছে। যেখানে সমস্যা আছে সেখানে সমাধানের ব্যবস্থ্যও আছে। জানা গেছে, স্বাস্থ্য বিভাগ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সিবিএইচসি অপারেশন প্লানের আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়ন করছিল। বর্তমান কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহয়তা ট্রাস্টের প্রক্রিয়াধীন। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে সাবেক একটি ওয়ার্ড, বর্তমান তিনটি ওয়ার্ডের ছয় হাজারের মতো জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক দিয়েছে সরকার। প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন পরিবার পরিকল্পনা সহকারী আছেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা। হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাঈম হাসান নয়ন বলেন, আপনাদের তথ্যের সঙ্গে আমি সহমত। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সুপারভিশন মনিটরিং চলছে।

 

সর্বশেষ খবর