রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জের গলার কাঁটা ব্যাটারিচালিত রিকশা

এম এ শাহীন, সিদ্ধিরগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জের গলার কাঁটা ব্যাটারিচালিত রিকশা

কিছুতেই কমছে না নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কে যানজট। প্রতিনিয়ত এ সড়কের কোনো না কোনো বাসস্ট্যান্ডে যানজট লেগেই থাকছে। এখানকার যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের যানজটের বিড়ম্বনা কিছুতেই দূর হচ্ছে না। এ সড়কের ৮টি স্থানে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও আদমজী ইপিজেডে চাকরিজীবীসহ নানা পেশার লোকজন প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের কবলে পড়ে মূল্যবান সময় নষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ সড়কে প্রায় ৩ হাজার অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক রয়েছে। প্রতিটি ইজিবাইকের চালকের কাছ থেকে জেলা ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকতা মাসে ৩ হাজার টাকা নিয়ে চলাচলের সুযোগ করে দিচ্ছে। অবৈধ সুবিদা নেওয়ার কারণে অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা বা ইজিবাইক। যানবাহন নিরসনে কোনো ট্রাফিক পুলিশকে কখনোই কাজ করতে দেখা যায়নি। অথচ এ সড়কটি নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে একটি। এ সড়কের যানজটের স্পটগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত করার দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা। গতকাল সরেজমিন গিয়ে এ সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যানজট অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-শিমরাইল সড়কটি দিয়েই আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নারায়ণগঞ্জ সাইলো, পদ্মা ও মেঘনা অয়েল ডিপোসহ অসংখ্য শিল্পকারখানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা।

এ সড়কের যানজটের কারণে শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীসহ নানা পেশার লোকজনের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে। এ সড়কের পাশেই রয়েছে র‌্যাব-১১ এর প্রধান কার্যালয়, শিল্প পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার কার্যালয়। এ সড়কটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ১০, ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পড়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ সড়কের আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জপুল, সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এসও রোড, বার্মা স্ট্যান্ড, ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী বাসস্ট্যান্ড, চৌধুরীবাড়ি বাসস্ট্যান্ড ও হাজীগঞ্জ গুদারাঘাট এলাকায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। জানা যায়, আদমজী ইপিজেডে শ্রমিকদের প্রবেশ ও বাইরের সময়, অফিস চালু ও ছুটির সময় এ সড়কের আটটি স্থানে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। এ যানজট কখনো কখনো স্থায়ী আকারও ধারণ করে। আবার প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায়ও সৃষ্টি হয় যানজট। মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন কবির জানান, এ সড়কের কোথাও যানজট দেখতে না পাওয়া গেলেও সিদ্ধিরগঞ্জপুল ও আদমজী ইপিজেড এলাকায় সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় যানজট থাকবেই। সবচেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জপুল বাসস্ট্যান্ডটি যানজটের স্ট্যান্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।  গোদনাইলের বাসিন্দা মহসিন ভূঁইয়া জানান, সড়কটিতে যানবাহন চলাচল আগের চেয়ে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় সড়কটির প্রশস্ততা বাড়েনি। এ সড়কটি এখনো দুই লেনেই রয়েছে। অথচ এ সড়কটি দিয়ে আদমজী ইপিজেডের মালামাল আনা-নেওয়া করা হচ্ছে। এ ছাড়াও পদ্মা ও মেঘনা জ্বালানি তেলের ডিপো থেকে প্রতিদিন শত শত ট্যাঙ্কলরি জ্বালানি তেল নিয়ে এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছে। শুনেছি ট্রাফিক পুলিশ ইজিবাইকের চালকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলাচলের সুযোগ করে দেওয়ায় ইদানীং এ সড়ক ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটো ও ইজিবাইক চলাচল বহুগুণ বেড়েছে। দিন দিনই এসব যানের সংখ্যা বাড়ছেই। কিন্তু বাড়ছে না সড়কের প্রশস্ততা।  এ বিষয়ে কথা হলে জেলা ট্রাফিক পুলিশের টিআই আবদুল করিম জানান, যারা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালকদের কাছ থেকে টাকা নেয় তারা টাউট বাটপার পুলিশের নামে করে নিয়ে থাকতে পারে। চাঁদাবাজির সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সর্বশেষ খবর