রবিবার, ১৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

মাছ লুটের অভিযোগে বাড়ি ছাড়া এক আওয়ামী লীগ নেতা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু তাহের হাওলাদার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে ১১ মাস ধরে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে একই উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাদের। এ সময় তাহের বাহিনীর সদস্যরা তার মাছের ঘের ও পুকুর থেকে লুটে নিয়েছে কোটি টাকার মাছ। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে থানা পুলিশে অভিযোগ দিলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন। গতকাল বাগেরহাট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাদের তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন, মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু তাহের হাওলাদার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই তাদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেন মোংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদারের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়।

গত বছরের ১৮ জুলাই উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের হামলায় শিকার হন মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুল কাদের। এরপর থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা মাওলানা আবদুল কাদের। এ ঘটনার পর তাহের বাহিনীর সদস্যরা এ আওয়ামী লীগ নেতার মাছের ঘের ও পুকুর থেকে লুটে নেয় কোটি টাকার মাছ। এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানা পুলিশে অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এমনকি থানা পুলিশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা পর্যন্ত গ্রহণ করেনি। আবু তাহের হাওলাদার এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর নিজ দলীয় প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি, ভাঙচুর ও চিংড়ি ঘের দখলসহ নানা অত্যাচার চালাচ্ছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১১ মাস ধরে প্রাণ ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাকে। সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা আবদুল কাদের বলেন, আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। যার কারণে আমি ১১ মাস ধরে এক ধরনের পলাতক জীবন-যাপন করছি। এ বিষয়ে উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। শুধু আমাকে নয়, তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অনেক চিংড়ি ঘের ব্যবসায়ী। এসব লোকের জমি ও চিংড়ি ঘের দখল করে উপজেলা চেয়ারম্যান তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মাছ চাষ করছেন। অতি দ্রুত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে দলীয় হাইকমান্ডসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। সংবাদ সম্মেলনে মোংলা উপজেলার সোনাইলতা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর শেখ, সহসভাপতি আমজাদ হোসেন, উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা মো. ফরিদ শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের মুঠোফোনে বলেন, আমি দুইবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছি। আমার কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী নেই, আমি করোর চিংড়ি ঘেরও দখল করিনি। আমার জনপ্রিয়তার কারণে দলের একটি চক্র আমার সুনাম ক্ষণœœ করতে এখন মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছে। 

সর্বশেষ খবর