সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছাগল ব্যবসায়ীর হালখাতা!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ছাগল ব্যবসায়ীর হালখাতা!

বছরের একটি সময় দোকানপাট বা ব্যবসায়ের হিসাব হালনাগাদ করেন ব্যবসায়ীরা। দেনা-পাওনার হিসাব সমন্বয় করে নতুন করে হিসাব খোলেন তারা। হালখাতা শুধু ব্যবসায়ীরা করলেও এবার ঝিনাইদহে ধার দেওয়া টাকা আদায়ে হালখাতা করেছেন এক ছাগল ব্যবসায়ী। টাকা পরিশোধ করার পর দেওয়া হয় খিচুরি আর ডিমভাজি। শনিবার বিকালে ব্যতিক্রমী এমন হালখাতার আয়োজন হয়েছিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া গ্রামের আশার মোড়ে। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম দেড় বছর ধরে দেওয়া ধারের টাকা আদায় করতে এমন হালখাতার আয়োজন করেন। সাইফুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকা জমান তিনি। বিদেশ যেতে না পারায় টাকাগুলো তার কাছেই জমা ছিল। গত দেড় বছর ধরে সে জমানো টাকা ধার দিয়েছেন তিনি। কেউ বিপদে পড়ে টাকা ধার চাইতে এলে ফেরাননি তিনি। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৫ গ্রামের ৭৪ জন ব্যক্তিকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ধার দিয়েছেন তিনি। পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে অনেক সময় দেনাদারদের বাড়িতে খুঁজে পান না। আর এতগুলো লোকের কাছে দিনের পর দিন না গিয়ে এমন হালখাতার আয়োজন করেন তিনি। ৩ হাজার ৮০০ টাকা খরচ করে খিচুরি আর ডিমভাজি করে দেওয়া হয় হালখাতায় আসা দেনাদারদের। মিল্টন নামের একজন বলেন, আমার টাকার খুব দরকার ছিল। আমি সাইফুলের কাছে গিয়েছিলাম।

উনার কাছ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেই টাকা আজ পরিশোধ করলাম। জসিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, সাইফুল ইসলাম খুব ভালো মনের মানুষ। কেউ তার কাছে গেলে ফিরে আসে না। যদি সাইফুলের কাছে টাকা থাকে তাহলে দেয়। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে অনেকেই উপকার পেয়েছে। তিনি খুব ভালো মনের মানুষ। রামনগর গ্রামের জহির রায়হান বলেন, আমার জীবনে এমন ব্যতিক্রমী হালখাতার কথা শুনিনি। আজ দেখলাম টাকা ধারের হালখাতা। এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার তো কোনো দোকান-পাট নেই। আমি মানুষকে টাকা ধার দিয়েছি যাতে তাদের উপকার হয়। টাকা ধার দিতে দিতে ব্যবসা করব সে পুঁজিতেও কম পড়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে টাকা চাওয়া সম্ভব নয়, তাই হালখাতার আয়োজন করেছি। আমার টাকার কোনো সুদ-লাভ নেই। আমার ছাগল ব্যবসার জন্য টাকার দরকার তাই টাকাগুলো ফেরত নিচ্ছি। পরে আবার যদি কেউ চায় তাদের আবার দেব। হালখাতায় ৩ হাজার ৮০০ টাকা খরচ করে খিচুরি আর ডিমভাজি করেছি। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৫ গ্রামের ৭৪ জন লোকের কাছে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পেতাম। হালখাতায় ৪৭ জন লোক এসেছিল আর আমার টাকা আদায় হয়েছে ১ লাখ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর