সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

বেদখল হয়ে গেছে বাস-বে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

বেদখল হয়ে গেছে বাস-বে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের যানজট এড়াতে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি বাস-বে (বিকল্প সড়ক) বেদখল হয়ে গেছে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি বাস স্টপেজগুলোতে দীর্ঘ যানজট লেগেই থাকছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিশ্বরোড মোড় থেকে রেহাইচর বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে ১০ ফিট রাস্তা প্রশস্তসহ প্রধানসড়কের যানজট কমাতে দুটি বাস-বে নির্মাণের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে ২০২০ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বিশ্বরোড ও শান্তিমোড় এলাকায় নওগাঁর এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুটি বাস-বে নির্মাণ করে সওজ। কিন্তু বিকল্প এই সড়ক দুটি নির্মাণের তিন বছর পার হয়ে গেলেও ব্যবহার করছে না বাস চালকরা। সরেজমিন দেখা যায়, শহরের শান্তিমোড় এলাকায় নির্মিত বাস-বে টি বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসসহ ট্রান্সপোর্টের কাভার্ডভ্যানের দখলে থাকে দিনভর। এই বাস-বের ওপর কাভার্ডভ্যান রেখে মাল লোড-আনলোড করে কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ছাড়া এই সড়কে ঢোকার মূল পথে সিএনজিসহ অন্যান্য ছোটবড় যানবাহন রাখা হয়। অন্যদিকে সওজের নির্মিত বিশ্বরোড মোড়ের বাস বে-টির মূল পথ দখল করে থাকে থ্রি-হুইলারসহ অন্যান্য যানবাহন। পাশাপাশি এই সড়কের পাশে থাকা হোটেলগুলোতে সাধারণ মানুষ খেতে গেলে সড়কটির ওপরেই তাদের মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য বাহন রাস্তাটির ওপরই রাখা হয়। এ ছাড়াও আশপাশে গড়ে ওঠা পসরা দোকানের খদ্দেররাও এর ওপরেই আড্ডা জমান। ফলে বাস-বে ব্যবহার না করায় যত্রতত্র বাস দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। তাই সড়কের পাশেই যাত্রী ওঠানামার কারণে অন্য যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী রুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী আসিফুর রহমান নামে এক ঠিকাদার জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী পর্যন্ত যে বাসগুলো চলাচল করে তা হলো- গেটলক সার্ভিস, মহানন্দা এক্সপ্রেস ও  লোকাল সার্ভিস। এর বাইরেও এই রুটে বিআরটিসির বাস চলাচল করে নিয়মিত। কিন্তু একেক সার্ভিসের বাস দাঁড়ায় একেক জায়গায়। এতে যাত্রীরা বিভ্রান্ত হন। কিন্তু বাস-বেতে সব বাস দাঁড়ালে যাত্রীদের জন্য সুবিধা হবে। সুকুমার প্রামাণিক নামে আরেক নিয়মিত যাত্রী বলেন, যত্রতত্র বাস দাঁড়ানোর কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। এ জন্য অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য জরুরি যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। অথচ এগুলো নিয়ে কারও কোনো পদক্ষেপ নেই। এদিকে তরিকুল ইসলাম নামে এক বাসচালক বলেন, বাস-বেগুলোর ওপর দিয়ে বাস যাওয়ার কথা থাকলেও ওই পথে অন্যান্য যানবাহনই বেশি চলাফেরা করছে। শুধু তাই নয় রাস্তাগুলো নির্মাণ করার পরপরই দখল হয়ে গেছে। যেদিক দিয়ে এই রাস্তায় গাড়ি ঢুকবে সেখানেই থাকছে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন। যার কারণে ওই রাস্তা দিয়ে বাস চলাচল করে না। তাই সওজ যেখানে বাস-বে নির্মাণ করেছে সেখানে গেলে যাত্রী পাওয়া যায় না। যার কারণে আমরা ওখানে দাঁড়ায় না। এদিকে বাস চালকদের সদিচ্ছার অভাবেই বাস চালকরা এই বাস-বে দিয়ে যাতায়াত করেন না বলে জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন ঝিনুক। তিনি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাস-বে দুটি নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় ২ কোটি টাকা। কিন্তু যানজট নিরসনের জন্য এই বাস-বে দুটি নির্মাণ করা হলেও তা ব্যবহার করছে না বাস চালকরা। এ নিয়ে বাস মালিকদের সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলা হয়েছে। তারপরও কোনো কাজ হয়নি। তবে বাস-বে দুটি সঠিকভাবে ব্যবহার করলে শহরের যানজট অনেক কমে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর