শনিবার, ২৪ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

হেলথ ভলান্টিয়ারদের বেতন ভাতা বিতরণে অনিয়ম

সঞ্জিত সাহা, নরসিংদী

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাল্টিপারপাস হেলথ ভলান্টিয়ারদের বেতন-ভাতা বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে ভলান্টিয়ারদের বেতন থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। শুধু তাই নয়, রায়পুরা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইসিজি মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজস্ব হাসপাতালে নিয়ে যান। ফলে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চিকিৎসকদের। আর এসব অনিয়ম করছেন খোদ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. খান নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর। তবে বেতন বিতরণে অনিয়মসহ ব্যক্তিগত হাসপাতালে যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি বেইজড হেলথকেয়ার সার্ভিস শুরু করে সরকার। এ সেবা সম্পর্কে সাধারণকে অবগত করতে প্রকল্পের ভিত্তিতে সারা দেশে হেলথ ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভলান্টিয়ারপ্রতি ৩ হাজার ৬০০ টাকা মাসিক বেতন-ভাতা বা সম্মানি ধরা হয়। প্রকল্পের নানা জটিলতার কারণে ভলান্টিয়ারদের সম্মানি আটকে যায়। সম্প্রতি সব ভলান্টিয়ারের এক বছরের বেতন বাবদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৮১ হাজার টাকা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জমা হয়। তিন দিন ধরে ভলান্টিয়ারদের বেতন-ভাতা বা সম্মানি দিচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ভলান্টিয়ারপ্রতি মাসিক ৩ হাজার ৬০০ টাকা করে ৪৩ হাজার ৩০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের বেতন-ভাতা থেকে ৯০০ টাকা কেটে এককালীন ৪২ হাজার ৩০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এভাবে ৩৬৩ জন ভলান্টিয়ার থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি রায়পুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইসিজি মেশিনসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও ডা. খান নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীরের ভৈরবের নিজস্ব হাসপাতাল ‘মেডি লাইফ হাসপাতালে’ নিয়ে যায়। ফলে রায়পুরা হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। রায়পুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন ভলান্টিয়ার বলেন, ৩ হাজার ৬০০ টাকা করে আমাদের এক বছরের বেতন এসেছে ৪৩ হাজার ২০০। সিগনেচার শিটে ৪৩ হাজার ২০০ টাকা লেখা থাকলেও আমাদের দেওয়া হয় ৪২ হাজার ৩০০। জনপ্রতি ৯০০ টাকা কেটে রাখা হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার পক্ষে টাকা বিতরণ করেন মোয়াজ্জেম হোসেন, জুয়েল আহমেদসহ কয়েকজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বলেন, ‘আমরা ছোট চাকরি করি। যেমন নির্দেশ আসে, তেমনই করতে হয়।’ অভিযোগ অস্বীকার করে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও ডা. খান নূরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘কোনো ভলান্টিয়ারকেই বেতন কম দেওয়া হচ্ছে না। সবাই ৪৩ হাজার ২০০ টাকা করে পেয়েই স্বাক্ষর করছে। এখানে অনেক লোক কাজ করত। তাই একেকজন একেকরকম কথা বলছে। প্রয়োজনে আপনারা এসে ঘুরে দেখে যান।’ এ ব্যাপারে নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর