শিরোনাম
রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

পশুবাহী গাড়িতে পথে পথে চাঁদাবাজি

পুলিশ বলছে অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ঈদুল আজহা ঘিরে লালমনিরহাটে জমে উঠেছে পশু বেচাকেনা। পাশাপাশি পথে পথে পশুবাহী পরিবহনে চলছে বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজি। রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দফতরের উপ-পরিচালক আবদুল হাই জানান, রংপুর বিভাগের আট জেলায় কোরবানির জন্য মোট পশুর চাহিদা ১০ লাখ ১০ হাজার ৬৭৫টি। এ অঞ্চলে পশু মজুদ আছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ১৫১টি। ৩ লক্ষাধিক পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। আবদুল হাই বলেন, এ অঞ্চলে এবার ১ লাখ ২ হাজার ৫১৬টি ছোট-বড় খামার ও ব্যক্তিপর্যায়ে এসব গবাদিপশু লালন-পালন হয়েছে। গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশু উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ফলে চাষিরা ঘরে আর গরু রাখতে চাইছেন না। যেমন দামই হোক গরু ছেড়ে দিতে চাইছেন তারা। ফলে যে হারে চাষিদের লাভবান হওয়ার কথা ছিল তা হচ্ছে না। এদিকে কোরবানির হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই টোল আদায় করা হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী শুধু ক্রেতার কাছ থেকে টোল তোলার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। হাটগুলোতে ইজারাদাররা বিক্রেতাদের কাছ থেকে গরুপ্রতি রসিদ ছাড়াই ১৫০-৩০০ এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে ৪০০-৭০০ টাকা নিচ্ছেন। প্রতি ছাগলে বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১৫০ ও ক্রেতার কাছ থেকে আদায় করছেন ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। শুধু ইজারাদারই নন, গরু হাটে আনতে পথে পথে টাকা গুনতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। মোড়ে মোড়ে পরিবহন আটকিয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন এবং মৌসুমি চাঁদাবাজরা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বড়খাতা হাটে গরু নিয়ে আসা খামারি হাদিয়ুল ইসলাম বলেন, হাতিবান্ধা থেকে গরু নিয়ে হাটে আসার পথে ৬০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। একই কথা বলেন, পাটগ্রমের জোংড়া থেকে আসা অপর খামারি মনির মিয়া। তিনি চাঁদা দিয়েছেন ৪৫০ টাকা। জেলার অন্তত ৩৩টি হাটে জমজমাট গরু বেচাকেনা হচ্ছে। সাহানুর রহমান নামে একজন জানান, প্রায় তিন বছর ধরে একটি ষাঁড় লালন-পালন করেছেন তিনি। এক মাস আগে থেকে রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন হাট এবং বিভিন্নভাবে দেনদরবার করছি বিক্রির জন্য কিন্তু হয়নি। বাধ্য হয়ে গতকাল ঢাকার ভাটারায় ৩০০ ফিট সাইদনগর হাটে গরু নিয়ে এসেছি। এখানে ২ লাখ টাকার বেশি দাম বলছে না। গরুটি পালতে আমার ২ লাখেরও বেশি খরচ হয়েছে। মনে হয় লোকসান গুনতে হবে। গরু লালন-পালনের ইচ্ছে মিটে গেছে আমার। লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, গবাদিপশুর হাটে এবং পথে সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে সাধারণ পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। হাটে জাল টাকা এবং মলম পার্টি চক্র শনাক্তেও বিশেষ টিম কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর